শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

হাজিদের জন্য মক্কা-মদিনার নানা দর্শনীয় স্থান

আপডেট : ২৬ মে ২০২৩, ১২:২৪

এ বছর বাংলাদেশ থেকে হাজিরা হজে যেতে শুরু করেছেন। যারা পবিত্র হজ পালনে যান, তাদের জন্য দর্শনীয় অনেক স্থান রয়েছে মাক্কা ও মদিনায়। মক্কার ঐতিহাসিক স্থানগুলো হলো মিনা, আরাফাত, জামারাত, মুজদালিফা, নবি করিম (স.)-এর জন্মস্থান বর্তমানে মক্কা লাইব্রেরি, জিন মসজিদ, মুয়াল্লা কবরস্থান, খাইফ মসজিদ, নামি রামসজিদ, জাবালে সাওর, জাবালে নূর, কিসওয়াহ অর্থাৎ কাবার গিলাফ তৈরির কারখানা, মক্কাই সলামি জাদুঘর, বিল্লাল মসজিদ, আবু কুবাইস পাহাড়, মসজিদে হারামের লাইব্রেরি এবং মসজিদে হারামের ভেতরে সদ্য প্রতিষ্ঠিত বিশেষ প্রদর্শনী হল। এ ছাড়া মক্কায় আপনি বেশ কিছু পাহাড় ও সুড়ঙ্গ সড়ক দেখতে পাবেন।

মক্কা :মক্কা ইসলাম ধর্মে পবিত্রতম নগরী হিসেবে স্বীকৃত। এই শহরে মুহাম্মদ (স.)-এর জন্ম এবং এখানেই তিনি কুরআনের প্রথম ওহি লাভ করেন (বিশেষভাবে হেরা গুহায়, যা শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে)। মুসলিমরা প্রতি বছর হজ ও উমরাহ পালনের জন্য এখানে আসেন। মক্কার প্রাণকেন্দ্রে কাবা অবস্থিত। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী কাবা হলো প্রথিবীর প্রথম মসজিদ। মুসলিমরা প্রতিদিন পাঁচ বার নামাজ আদায়ের সময় এই কাবার দিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখেন। এটি তাদের প্রার্থনার সময় দিক নির্দেশ করে।

মদিনা :মদিনা নবির শহর। মসজিদে নববি এবং রওজায়ে আতহার এই শহরের অন্যতম আকর্ষণ। এ ছাড়া মদিনায় অসংখ্য খেজুরবাগান রয়েছে। এর বাইরে মদিনার দর্শনীয় স্থানের অন্যতম হলো মসজিদে নববির পাশে অবস্থিত কুরআন মিউজিয়াম, বাকিউল গারকাদ কবরস্থান, অর্থাৎ জান্নাতুল বাকি কবরস্থান, মসজিদে আবু বকর, মসজিদে উমর ফারুক, মসজিদে আলী, গামামা মসজিদ, বিলাল মসজিদ, কুবা মসজিদ, উহুদ পাহাড়, মসজিদে কিবলাতাইন, জুমা মসজিদ, উসমান ইবন আফফান মসজিদ, ইমাম বুখারি মসজিদ, খন্দক এলাকা, ওসমানীয় আমলের আল হেজাজ রেল স্টেশন জাদুঘর, সালমান ফারসির কথিত বাগান, এটা মসজিদে নববির দক্ষিণে অবস্থিত খেজুরবাগান, ইজাবা মসজিদ, কেন্দ্রীয় খেজুর মার্কেট ও আল শাজারাহ মসজিদ।

মসজিদে কুবা :মুসলমানদের প্রথম মসজিদ হচ্ছে মসজিদে কুবা। মসজিদে নববি থেকে চার কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এই মসজিদ। ধবধবে সাদা রঙের অনন্য নির্মাণশৈলীর এই মসজিদের নাম রাখা হয়েছে একটি কূপের নামানুসারে। হজরত মুহাম্মদ (স.) মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় আসার পর সাহাবাদের নিয়ে নিজের পবিত্র হাতে এই মসজিদ তৈরি করেন। রসুল (স.) মদিনায় ঢুকে শহরের প্রবেশদ্বার কুবায় নামাজ পড়েন। এই মসজিদে দুই রাকাত নামাজ আদায়ে এক উমরাহর সওয়াব পাওয়া যায়।

কিবলাতাইন মসজিদ :কিবলাতাইন মসজিদ মানে দুই কিবলার মসজিদ। রসুল (স.) সাহাবিদের নিয়ে এখানে নামাজ আদায়ের সময় কেবলা পরিবর্তনের ওহি নাজিল হয়। এ সময় ওহি পাওয়ার পর আল-আকসা থেকে নামাজের মধ্যে মুখ ঘুরিয়ে কাবামুখী হয়ে নামাজ আদায় করেন। এ জন্য এই মসজিদের নাম কিবলাতাইন (দুই কিবলার মসজিদ)।  ভেতরে মূল অংশ অক্ষত রেখে চারদিকে দালান করে মসজিদ বাড়ানো হয়েছে।

ওহুদ পাহাড় :ইসলামের ইতিহাসে দ্বিতীয় যুদ্ধ হয় এই পাহাড় ঘিরে। দুই মাথাওয়ালা একটি পাহাড়, মাঝে একটু নিচু। তৃতীয় হিজরির শাওয়াল মাসে ওহুদ যুদ্ধ হয়। ওহুদ পাহাড় মদিনার সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। পাথরের এই পাহাড়ের উচ্চতা ৩৫০ মিটার। পূর্ব থেকে পশ্চিমে ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ পাহাড়টির প্রস্থ ১০০ থেকে ৩০০ মিটার।

মসজিদে গামামাহ :গামামাহ শব্দের অর্থ বৃষ্টি। বৃষ্টির জন্য হজরত মুহাম্মদ (স.) এখানে নামাজ আদায় করেছেন। তাই মসজিদটির নাম রাখা হয় গামামাহ মসজিদ। রসুল (স.) এখানে প্রথম ঈদেও নামাজ আদায় করেন। একে ঈদগাহের মসজিদও বলে।

বাদশাহ ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স :মদিনা শহরের তাবুক সড়কে বাদশাহ ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স। হজ শেষে হাজিরা বিমানবন্দর ও হজ টার্মিনাল দিয়ে দেশে ফেরার সময় তাদের হাতে উপহার হিসেবে পবিত্র কুরআন শরিফ দেওয়া হয়। এখান থেকে প্রতি বছর লাখ লাখ কপি কুরআন শরিফ ছাপা হয়। রয়েছে কুরআন গবেষণা কেন্দ্র, পাঠাগার।

লেখক: বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ইসলামি গবেষক

ইত্তেফাক/কেকে

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন