বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পাল্টা আক্রমণ করতে প্রস্তুত ইউক্রেন

আপডেট : ২৭ মে ২০২৩, ১৭:৫৬

রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ-প্রতীক্ষিত পাল্টা আক্রমণ করতে কিয়েভ প্রস্তুত। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ওলেকসি দানিলভ।

তিনি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারে শিগগিরই বড়সড় এ আক্রমণ শুরু করার কথা জানালেও কোনো নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করেননি।

দানিলভ সতর্ক করে বলেন, 'এটা কাল, পরশু বা সপ্তাহখানেকের মধ্যেই শুরু হতে পারে। এই পাল্টা-আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়ে ইউক্রেইন সরকারের ভুল করার কোনো অধিকার নেই কারণ এটি একটি ঐতিহাসিক সুযোগ যা আমরা হারাতে পারিনা।' 

ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের সেক্রেটারি হিসেবে দানিলভ প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির যুদ্ধ মন্ত্রিসভার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছেন।

সাক্ষাৎকারে দানিলভ বাখমুত শহর থেকে ওয়াগনারের কিছু যোদ্ধাকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলেও নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, 'ওই সেনা প্রত্যাহারের মানে এই নয় যে তারা আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ থামাচ্ছে।' 

বেলারুশে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন শুরু নিয়ে ‘অস্থির হচ্ছেন না’ জানান দানিলভ। 

রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা-আক্রমণ শানানোর পরিকল্পনার কথা ইউক্রেইন কয়েক মাস ধরেই বলে আসছে। কিন্তু সেনাদের প্রশিক্ষিত করতে এবং পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম পেতে তাদের সময় লাগছিল আর এই সময়ের মধ্যে রাশিয়াও তাদের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি সেরে নিয়েছে।

এই পাল্টা-আক্রমণের ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে বলে ভাষ্য বিশ্লেষকদের।

তাদের ধারণা, কিইভ সরকারের ইউক্রেইনের জনগণ ও পশ্চিমা মিত্রদের এটি দেখানো দরকার যে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা লাইন ভাঙতে, যুদ্ধক্ষেত্রে কার্যত যে সামরিক অচলাবস্থা আছে তার অবসান ঘটাতে এবং নিজেদের কিছু ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারে তারা সক্ষম।

দানিলভ জানিয়েছেন, তাদের সশস্ত্র বাহিনী তখনই আক্রমণ শুরু করবে, যখন কমান্ডারদের হিসাবে ‘যুদ্ধের ওই পর্যায়ে সবচেয়ে ভালো ফল করার সম্ভাবনা আছে’ বলে মনে হবে।

ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী পাল্টা-আক্রমণের জন্য প্রস্তুত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা সবসময় প্রস্তুত, যেমনটা আমরা যে কোনো সময়ে আমাদের দেশের প্রতিরক্ষায় প্রস্তুত থাকি। এটা সময়ের ব্যাপার নয়।

'আমাদের বুঝতে হবে যে, ঈশ্বর আমাদের দেশকে সত্যিকারের স্বাধীন, বড় ইউরোপীয় দেশ হতে যে ঐতিহাসিক সুযোগ দিয়েছে, আমরা তা হারাতে পারি না।'

কখন আক্রমণ শুরু হবে এই প্রশ্নে তার জবাব, 'এটা কাল হতে পারে, হতে পারে পরশু কিংবা সপ্তাহখানেকের মধ্যে। আমি যদি আক্রমণ শুরু বা ওই ধরনের ঘটনাগুলোর তারিখ বলি, তা হবে খুবই অদ্ভূত। এটা হবে না। আমাদের দেশের সামনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে আর আমরা বুঝি যে, ভুল করার কোনো অধিকার আমাদের নেই।'

ইউক্রেনের পাল্টা-আক্রমণ এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে এমন ধারণা উড়িয়ে দিয়ে ইউক্রেইনের এই ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র ও সামরিক সরঞ্জাম ধ্বংসের কাজ’ ইউক্রেইন গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকেই শুরু করেছে।

'এই যুদ্ধের মধ্যে আমাদের কোনো ছুটির দিন নেই,' বলেছেন তিনি।

দীর্ঘ সময় ধরে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বাখমুত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পক্ষেও অবস্থান নেন তিনি। শহরটি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টায় ইউক্রেইনের বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্বীকারও করে নেন তিনি।

ইত্তেফাক/এফএস