শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

২০২৭ সালে নগদের মুনাফা একশ কোটি টাকা ছাড়াবে

আপডেট : ২৮ মে ২০২৩, ২২:১৮

সেবার কলেরবর বৃদ্ধি ও ব্যবসা সম্প্রসারণের মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যেই মুনাফায় চলে যাবে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নগদ। পরের এক বছরের মধ্যেই মুনাফার অংক একশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে এবং ২০২৮ সালে সেটি পৌঁনে দুইশ কোটি টাকা পেরুবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) সম্প্রতি নগদ লিমিটেডের জমা দেওয়া একটি প্রোসপেক্টাস অনুসারে, প্রথম চার বছরে কয়েকশ কোটি টাকা লোকসান করলেও ২০২৪ সালে লোকসানের অংক ৫ কোটি টাকার মধ্যে চলে আসবে। 
নগদ যে পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৫ সালে লাভের পরিমাণ হবে ২৮ কোটি টাকা। ২০২৬ সালে সেটি হবে ৬৪ কোটি, ২০২৭ সালে ১১৪ কোটি এবং ২০২৮ সালে ১৭১ কোটি টাকা। একই সময়ে সামগ্রিক রাজস্ব আয়ের অংকও বাড়বে বহুখাতে। আয় বৃদ্ধি এবং পরিচালন ও বিপণন ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমেই মূলত সম্ভাব্য মুনাফার হিসেব প্রস্তুত করা হয়েছে।

তাছাড়া সম্প্রতি বিএসইসি-এর অনুমোদন পাওয়া ৫১০ কোটি টাকার জিরো কুপন বন্ড ইস্যু করে পাওয়া বিনিয়োগও নগদকে অনেকখানি এগিয়ে দেবে বলে জানিয়েছে মোবাইল আর্থিক সেবা অপারেটরটি।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বন্ড অনুমোদনের ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের লিকুইডিটি থাকতে হবে এবং প্রফিট্যাবিলিটি ফোরকাস্ট হতে হবে। নগদের লিকুইডিটি তো আছেই। আর ওরা প্রফিট্যাবিলিটি ফোরকাস্ট দেখিয়েছে। গ্রাহকদের বোনাস দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে কোম্পানির খরচ হয়। আশা করি তারা অল্প সময়ের মধ্যেই আয়ে ফিরবে।’

২০২৪ সাল থেকে নগদের মোট রাজস্ব আয় ১ হাজার ১১৪ কোটি টাকায় গিয়ে পৌঁছাবে বলে প্রোসপেক্টাসে বলা হয়েছে। পরের চার বছরে রাজস্ব আয়ের অংকগুলো হবে যথাক্রমে ১ হাজার ৩২৪ কোটি, ১ হাজার ৫৩২ কোটি, ১ হাজার ৭৭৩ কোটি এবং ২ হাজার ৫৩ কোটি টাকা।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে নগদের হেড অব পাবলিক কমিউনিকেশন্স মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে রেমিটেন্সসহ আরো অনেকগুলো নতুন সেবা চালু করেছে নগদ। নগদের পেমেন্ট ক্যাম্পেইন সারা দেশে ডিজিটাল পেমেন্টে গ্রাহকদের আগ্রহী করে তুলেছে। আর এসবের পর ভর করেই মুনাফার অংকগুলো করছি আমরা।’

তিনি বলেন, মাত্র চার বছরে সাড়ে সাত কোটি গ্রাহক পেয়েছে নগদ। আর প্রতিদিনের গড় লেনদেন এখন বারোশ কোটি টাকার মতো। এত অল্প সময়ে এত বেশি গ্রাহক পাওয়া বা এতো বেশী লেনদেনে এর আগে কেউেই যেতে পারেনি। আর এসবই নগদকে লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে রাখবে বলে মনে করেন তিনি।

২০১৯ সালে বাণিজ্যিক সেবা শুরু করা নগদ প্রথম চার বছরে লোকসান দিয়েছে মূলত গ্রাহক সংযুক্ত করা, নেটওয়ার্ক তৈরি, বিপণন কাঠামো সাজানোতে অনেক খরচ করার কারণে। তবে শুধু নগদ নয়, যেকোনো স্টার্টআপের ক্ষেত্রেই প্রথম কয়েক বছর এমনটা হয় বলেও মন্তব্য করেন জাহিদুল ইসলাম।

একই কথা বলেন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস)-এর পরিচালক এবং ড্রিম-সেভেন্টিওয়ান-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশাদ কবির। তিনি বলেন, এতো বড় হয়েও বিকাশ গত বছর পর্যন্ত লোকসান করেছে। গ্রামীণফোনও শুরুতে লোকসান দিয়েছে। 

রাশাদ কবির বলেন, ‘এ ধরণের কোম্পানিকে বড় অংকের বিনিয়োগ করতে হয় গ্রাহক ভিত্তি তৈরি করতে। পরে গ্রাহক সেবার আয় দিয়ে পুশিয়ে নেওয়া হয়।’

মূলত অ্যাকাউন্ট খোলার অভিনব উদ্ভাবন দিয়ে শুরু থেকেই সকলের নজরে আসতে থাকে নগদ। পরে নতুন নতুন সেবা দিয়ে গ্রাহকদের ভালোবাসা অর্জন করতে শুরু করে ডাক বিভাগের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা মোবাইল আর্থিক সেবা অপারেটরটি।

ইত্তেফাক/এমএএম