শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিভাগীয় শহরে রাবির ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের 

আপডেট : ০১ জুন ২০২৩, ১৭:২৯

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা  সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (২৯ মে) শুরু হয়ে বুধবার (৩১ মে) 'বি' ইউনিটের পরীক্ষার মাধ্যমে এই কার্যক্রম শেষ হয়। এই ভর্তি পরীক্ষায় রাজশাহীতে তিন লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। তাই অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয় দূর থেকে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। খরচ ও ভোগান্তি কমাতে বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের।

পরীক্ষা চলাকালে ৩ দিনে অন্তত ১৫০ জন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা হয় দৈনিক ইত্তেফাক'র। এ সময় তারা আবাসন সমস্যা, খাবারের সমস্যা, যাতায়াতে সমস্যা, যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া, বিশুদ্ধ পানির সংকট, যানজটসহ নানান ভোগান্তির কারণে বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানান।

চট্রগ্রাম থেকে নজরুল ইসলাম তার একমাত্র মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। ঘাসের উপর বসে একহাতে পানি এবং অন্য হাতে পাখা দিয়ে মেয়ে আলিয়া তাসমিম জুঁইকে বাতাস করছিলেন। তিনি বলেন, আমি চট্টগ্রাম থেকে আমার মেয়েকে নিয়ে এসেছি। বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা হলে আমার মেয়ে চট্টগ্রামে পরীক্ষা দিতে পারত। এতদূর আসতে হতো না। আমার মেয়ে কখনোই এতো লম্বা জার্নি করেনি। ইতিমধ্যে কয়েকবার অসুস্থ হয়েছে। আমার মতো আরও অনেকেই আছেন। বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা হলে এমন ভোগান্তি হতো না। 

বরিশাল থেকে মাহমুদুল হাসানকে নিয়ে এসেছেন তার মা কোহিনূর বেগম। মাহমুদের বাবা বিদেশ থাকেন। এতো দূরে ছেলেকে একা যেতে দিতে পারেন না তিনি। তিনি বলেন, বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা হলে সকলের জন্যই উপকার হয়। শিক্ষার্থীরা কোন ঝামেলা ছাড়াই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। অভিভাবকদেরও কোন ভোগান্তি ও দুশ্চিন্তা হয় না। আমি বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষার জন্য দাবি জানাই।

খুলনা থেকে এসেছেন আবু সাইফ। রাত কাটিয়েছেন এক মসজিদের বারান্দায়। বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাতায়াতে আমাদের অনেক সমস্যা হয়। থাকার জায়গা পাইনি রাতে ঘুম হয়নি। খাবার খেতে পারছি না, দামও বেশি নিচ্ছে। নিজেকে দুর্বল লাগছে। কোনরকম পরীক্ষাটা দিতে পারলেই হল।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, রাজশাহী ছোট শহর। এখানে দূরদূরান্ত থেকে আসা ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হয়রানি পোহাতে হয়। এবার মহামান্য রাষ্ট্রপতি অভিপ্রায় করেছেন, “একক” পদ্ধতিতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। “একক” পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হলে তখন সেটি কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৩ সালের আইন অনুযায়ী চলে। ভর্তিবিষয়ক যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একমাত্র একাডেমিক কাউন্সিলের। একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করবে। যদি একক ভর্তি পরীক্ষা বাস্তবায়ন করা না হয়, অবশ্যই আমরা চেষ্টা করব বিভাগীয় পর্যায়ে পরীক্ষা নিতে। এটা আমরা এখন থেকেই চিন্তাভাবনা করছি।

ইত্তেফাক/এআই