মাদক পাচারকারীরা দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের বাইরে বেশি দাম দেওয়া ক্রেতাদের কাছে ‘ক্রিস্টাল মেথামফেটামিন বা আইস নামে পরিচিত মাদক পৌঁছে দিতে নতুন নতুন পন্থা বেছে নিচ্ছে।
শুক্রবার (২ জুন) প্রকাশ করা জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বাংলাদেশে মাদক পাচারের প্রসঙ্গও।
বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ড ও চীনের স্থলপথে তল্লাশির কারণে অপরাধী চক্র এখন সমুদ্রপথে বেশি মাদক পরিবহন করছে। যে কারণে এই মাদকের চালান ঠেকানো কঠিন হচ্ছে। জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক কার্যালয় জানিয়েছে, মাদক ব্যবসায়ীরা এখন আইন প্রয়োগকারীদের পাশ কাটিয়ে মাদক চোরাচালান শিখে গেছে। এসব আইস মাদক জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে বিক্রি করা হয়।
জাতিসংঘের এই সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, মিয়ানমারের বিভিন্ন অংশের সুপার ল্যাবে তৈরি মেথামফেটামিনের ছড়িয়ে পড়া থামানো যাচ্ছে না। অনেকের বিশ্বাস, বিশ্বের বৃহত্তম মেথ বাণিজ্যের মূল হচ্ছে মিয়ানমারের শান রাজ্য। মাদক পাচারকারীরা লাওসের সীমানা, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের সীমানা দিয়ে বিপুল পরিমাণ মেথ পাচার করে থাকে। এই এলাকাটি ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল’ হিসেবেও পরিচিত।
জাতিসংঘের আঞ্চলিক প্রতিনিধি জেরেমি ডগলাস বলেন, তাদের ২০২২ সালে থাই সীমান্তে বেশি কাজ করতে দেখেছি। পাচারকারীরা বিপুল পরিমাণের মাদক লাওস ও উত্তর থাইল্যান্ডে পাচার করাও অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে তারা মধ্য মিয়ানমার থেকে আন্দামান সাগর পর্যন্ত সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে।
সাধারণত দুটি ধরনে এই মেথ আসে। একটি ইয়াবা আরেকটি হলো উচ্চ আসক্তির ক্রিস্টাল মেথ। অপরাধীরা থাইল্যান্ডকে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে মাদক সরবরাহের রুট হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। এসব উন্নত দেশে মাদকের দাম ব্যাংককের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। প্রচুর পরিমাণে মেথ বাংলাদেশ, ভারতেও আসে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত বছর থাই ও চীনা নিরাপত্তা কর্মীরা আগের বছরের তুলনায় কম পরিমাণ মাদক আটক করতে সক্ষম হয়। পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার পুলিশ ২০২২ সালে ১৫১ টন মেথ উদ্ধার করেছে। এর আগে ২০২১ সালে রেকর্ড ১৭২ টন মেথ উদ্ধার করা হয়। এখন এক কেজি মেথের দাম যে কোনো সময়ের তুলনায় কম। অর্থাৎ এখন মেথের প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। কর্মকর্তারা মনে করেন, মাদক পাচারকারীরা তাদের নেটওয়ার্কে বৈচিত্র্য এনেছে এবং প্রতিনিয়ত বিকল্প সমুদ্রপথে মাদক পাচার করছে।