রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় খাবারের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার ও ক্যাম্পাসের হলগুলোতে খাবারের মান বাড়ানোর দাবি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।
রোববার (০৪ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট-এর যৌথ আয়োজনে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচিতে ১৭টি হলের ডাইনিং থেকে খাবার এনে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে টাঙানো হয় এবং প্রতিটি খাবারের ওপর সাদা কাগজে হলের নাম লিখে রাখেন তারা। এই সময় খাবারের মান পরিদর্শন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আহবান জানানো হয়।
তাদের অভিযোগ, গত ২০২২ সালের ১ জুলাই খাবারের মান বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়ে খাবারের দাম ৪ টাকা বৃদ্ধি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু খাবারের মান পূর্বের থেকেও নিম্নগামী হয়। ক্যাফেটেরিয়া এই দাম বৃদ্ধিতে আরও একধাপ এগিয়ে। একই বছরের জুলাই ও এ বছরের মে মাসে দুই দফায় সকল খাবারের মূল্য মোট ১০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। সাধারণ মিলের দাম ২৮ টাকা রাখা হলেও আয়োজন এতোটাই অপর্যাপ্ত যে তা পরিণত হয়েছে শুধুই নিয়ম রক্ষার জন্য। প্রতিদিন অধিকাংশ শিক্ষার্থীই স্বল্পমূল্যের সাধারণ মিল না পেয়ে ফিরে যায় অথবা উচ্চমূল্যে অন্যান্য খাবার কিনতে বাধ্য হয়। ক্যাফেটেরিয়ার প্রতিষ্ঠা শিক্ষার্থীদেরকে স্বল্প মূল্যে ভালো মানের খাবার পরিবেশনের মতো সেবা প্রদানের উদ্দেশ্য হলেও বর্তমানে উচ্চমূল্যের খাবার বিক্রি, বাণিজ্যিক অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেয়ার মতো মুনাফা অর্জনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তানিব বলেন, মানহীন খাবার গ্রহণ করায় আমরা পড়াশোনায় ফোকাস করতে পারছি না। এছাড়াও দাম বৃদ্ধির ফলে অনেক মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীর জীবনে যা মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাবারের দাম কমিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তুকি দিয়ে খাবারের মান নিশ্চিত করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটাই প্রত্যাশা এ শিক্ষার্থীর।
অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা রিয়ান আলী বলেন, আমরা খাবারের সমস্যা, খাবারের নিম্ন মান, খাবারের দাম বৃদ্ধি এই সমস্যা নিয়ে এখানে দাঁড়িয়েছি। দেশে দ্রব্য মূল্যের দাম যখন অতি চরমে ঠিক তখনই ক্যাফেটারিয়ার খাবারের দাম বাড়ানো হচ্ছে। হলগুলো এবং ক্যাফেটেরিয়াতে যে খাবার সরবরাহ করা হয় তা হচ্ছে শূন্য ক্যালোরির খাবার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কখনই শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও সমাধান নিয়ে ভাবে না।
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী সংগঠনের সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, দেশে মুদ্রাস্ফীতির কারণে সাধারণ পরিবারগুলোর দৈন্যদশা সেখানে প্রশাসন খাবারের মান নিম্নমুখী করে ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি করে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার দরকার সেখানে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো দিকে নজর দিচ্ছে। ক্যাফেটারিয়ায় এসির ব্যবস্থা করা হচ্ছে অথচ শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন পুষ্টিসমৃদ্ধি খাবার। প্রশাসন কাজী নজরুল মিলনায়তনের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ২০কোটি টাকা বাজেট করে সেখানে তারা ক্যাম্পাসের ৩৮ হাজার শিক্ষার্থীর পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের নিশ্চয়তা তারা দিতে পারেনা।