রোববার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৯ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

কেসিসি নির্বাচন: শতকরা ৬৮ কাউন্সিলর প্রার্থীই ঠিকাদার, রয়েছে শিক্ষক-চিকিৎসকও

আপডেট : ০৬ জুন ২০২৩, ১৪:২৩

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে নানা পেশার সমন্বয় ঘটেছে। এবারের নির্বাচনে শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, আইনজীবী, ঠিকাদার, ইন্স্যুরেন্স কর্মকর্তা, চাকরিজীবী, শ্রমিক ও সমাজসেবকরাও প্রার্থী হয়েছেন। প্রার্থীর তালিকায় বেকারও আছেন। প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে।

এবারের কেসিসি নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৬৮ ভাগ কাউন্সিলর প্রার্থীর আয়ের উৎস ব্যবসা ও ঠিকাদারি। কেসিসি নির্বাচনে সাধারণ ও সংরক্ষিত মোট ৪১ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭৫ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ৮৬ জনই ব্যবসায়ী এবং ৩৩ জন ঠিকাদার।

হলফনামায় দেখা গেছে, ব্যবসা ও ঠিকাদারির বাইরে ১৬ জন গৃহিনী নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। এছাড়া ছয় জন আইনজীবী, পাঁচ জন চাকরিজীবী, পাঁচ জন শিক্ষক, দুজন সাংবাদিক, দুজন শ্রমিক ও একজন দন্ত চিকিৎসক নির্বাচন করছেন। কৃষি ও মৎস্য চাষকে পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন ১০ জন। পেশার ঘরে ‘প্রযোজ্য নয়’ উল্লেখ করেছেন পাঁচ জন।

হলফনামায় নিজেকে শ্রমিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন ১নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. নাসির ও ৯নম্বর ওয়ার্ডের দেলোয়ার হোসেন মাতব্বর। দন্ত চিকিৎসাকে পেশা হিসাবে দেখিয়েছেন ১০নম্বর ওয়ার্ডের এ এম এম সায়েম মিয়া।

হলফনামা বিশ্লেষণ করে আরও দেখা গেছে, ২৬নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম মাওলা শানু পেশার ঘরে লিখেছেন ‘পরামর্শক’। সমাজসেবাকে পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন সংরক্ষিত ৭নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মাহমুদা বেগম।

এছাড়া কার্তিককুল সালেহা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুস সালাম ও দৌলতপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী এবারও প্রার্থী হয়েছেন। তারা দুজন যথাক্রমে নগরীর ৩ ও ৫নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর। এছাড়া নগরীর ২৮নম্বর ওয়ার্ডে এজাজ শেখ নামের একজন প্রাইভেট শিক্ষক এবং সংরক্ষিত ৮নম্বর ওয়ার্ডে ঝুমুর শেখ নামের আরেক কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

নিজেকে মৎস্য চাষী হিসেবে উল্লেখ করেছেন ১৭নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাফিজুর রহমান হাফিজ ও ২৫নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী আকবর টিপু। সংরক্ষিত ৯নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মাজেদা খাতুন আয়ের উৎসের ঘরে লিখেছেন ‘দর্জি’। একই তথ্য দিয়েছেন সংরক্ষিত ১০নম্বর ওয়ার্ডের আঞ্জুয়ারা বেগম।

এদিকে এবারের নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে দুজন ফটো সাংবাদিক অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে নগরীর ১১নম্বর ওয়ার্ডে সিনিয়র সাংবাদিক আনোয়ারুল ইসলাম কাজল এবং ১২নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিনিয়র ফটো সাংবাদিক রবিউল গাজী উজ্জ্বল। এদের মধ্যে আনোয়ারুল ইসলাম কাজল খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের (কেইউজে) সাবেক সভাপতি।

এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অ্যাডভোকেট কুদরত ই খুদা বলেন, বিভিন্ন সময় আয়কর নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মালিকরাই নিজেদের ব্যবসায়ী, কৃষি ও মৎস চাষী হিসেবে পরিচয় দেন। ফলে নির্বাচিত হওয়ার পরে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আসে। এজন্য হলফনামায় আয়ের উৎস হিসেবে ব্যবসা লিখলেও কী ধরনের ব্যবসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোথায় তা বিস্তারিত উল্লেখ করা উচিত। তাহলে ভোটারদের সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে।

ইত্তেফাক/আরএজে