শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

রিপাবলিকান পার্টিতে ট্রাম্পের যত প্রতিদ্বন্দ্বী

আপডেট : ০৭ জুন ২০২৩, ০৯:২০

২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পাবার লড়াই এখন জমে উঠতে যাচ্ছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে নির্বাচন করবেন তা তো তিনি আগেই বলে দিয়েছেন, এবার তাকে চ্যালেঞ্জ করার মতো বড় মাপের আরো দু'জন প্রতিদ্বন্দ্বীও মাঠে নেমে পড়েছেন। খবর বিবিসির। 

সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের প্রার্থী হবার কথা ঘোষণা করেছেন অতিসম্প্রতি। আর নিউ জার্সি রাজ্যের সাবেক গভর্নর ক্রিস ক্রিস্টিও শিগগির এ ঘোষণা দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

জনমত জরিপে এখনো এগিয়ে আছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মাইক পেন্স ছিলেন তারই ভাইস প্রেসিডেন্ট। অনেকেই মনে করছেন - রিপাবলিকান পার্টির চূড়ান্ত প্রার্থী শেষ পর্যন্ত যে-ই হোন, এই লড়াইটা হবে এক তিক্ত প্রতিযোগিতা।

যিনি এই দৌড়ে জিতবেন তিনি খুব সম্ভবত মোকাবিলা করবেন ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। আগামী বছরের নভেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এখানে একবার দেখে নেয়া যাক - রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী তালিকায় প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কে কে আছে।

মাইক পেন্স

মাইক পেন্স

মাইক পেন্স তার প্রচারাভিযান শুরু করার আনুষ্ঠানিক কাগজপত্র জমা দিয়েছেন ৫ জুন। ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত তিনি ছিলেন তিনি ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন বিশ্বস্ত ডেপুটি, কিন্তু ২০২১ সালের ক্যাপিটল হিল দাঙ্গা তাদের সম্পর্কে ভাঙন ধরায়।

মাইক পেন্স একজন সৈনিকের পুত্র। তার পিতা কোরিয়ান যুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর হয়ে লড়েছিলেন। পেন্স রিপাবলিকান রাজনীতিতে তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন রেডিওতে একজন টক শো-র উপস্থাপক হিসেবে। 

তিনি ২০২০ সালে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস বা মার্কিন কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষে সদস্য নির্বাচিত হন, এবং এ পদে ছিলেন ২০১৩ সাল পর্যন্ত। তিনি রিপাবলিকান পার্টির ভেতরকার টি পার্টি আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলেন এবং তিনি নিজেকে বর্ণনা করেন একজন নীতিবান রক্ষণশীল হিসেবে।

পেন্স ইন্ডিয়ানা রাজ্যের গভর্নর ছিলেন ২০১৩-১৭ সময়কালে। ওই পদে থাকার সময় তিনি সেই রাজ্যের ইতিহাসে সবেয় বড় আকারের কর ছাঁটাই করেন এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা এবং গর্ভপাতের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করার দুটি বিলে স্বাক্ষর করেন।

তিনি একজন 'বর্ন - এগেইন' ইভানজেলিক্যাল খ্রিস্টান। ৬৩ বছর বয়স্ক মাইক পেন্সকে ২০১৬ সালে ট্রাম্প তার রানিং মেট করার পর তার পক্ষে ভোট সংহত করার ক্ষেত্রে তা এক বড় ভুমিকা রেখেছিল। মাইক পেন্স একজন মৃদুভাষী এবং ধীর-স্থির প্রকৃতির লোক - ট্রাম্পের বিপরীত।

কিন্তু ২০২০ সালের নির্বাচনী ফলাফল উল্টে দেবার প্রয়াসে ট্রাম্পকে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করায় ট্রাম্প তার ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং বলেন পেন্সের 'সাহস' নেই।

২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে যখন ট্রাম্প-সমর্থক দাঙ্গাকারীরা ওয়াশিংটনে ক্যাপিটল ভবনে হামলা করে তখন তাদেরকে "মাইক পেন্সকে ফাঁসি দাও" বলে শ্লোগান দিতে শোনা যায়। খবর অনুযায়ী এক পর্যায়ে তারা ভাইস-প্রেসিডেন্টের ৪০ ফুটের মধ্যে চলে এসেছিল।

এর পর থেকে ট্রাম্প ও পেন্স পরস্পরের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন।

তবে পেন্স এখন এমন অবস্থান বজায় রেখে চলেছেন যাতে ট্রাম্প-সমর্থক ভোটারদের থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন না হয়ে পড়েন।

ক্রিস ক্রিস্টি

২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রথম রিপাবলিকান প্রাইমারি অনুষ্ঠিত হবে নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যে। আর এখান থেকেই নির্বাচনে তার প্রার্থিতার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে যাচ্ছেন ক্রিস ক্রিস্টি।

ক্রিস্টি নিউজার্সি রাজ্যের সাবেক গভর্নর। তিনি ২০১৬ সালেও রিপাবলিকান প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন কিন্তু সফল হননি - আর এর পর তিনি সমর্থন দেয়া শুরু করেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।

সেই নির্বাচনে জয়ী ট্রাম্প প্রশাসনের দায়িত্ব গ্রহণের সময় তার ট্রানজিশন টিমের প্রধান ছিলেন ক্রিস্টি। তা ছাড়া ২০২০ সালের নির্বাচনের আগেও বাইডেনের বিরুদ্ধে বিতর্কের সময় ট্রাম্পকে প্রস্তুত করার ভূমিকা রাখেন তিনি।

কিন্তু ক্যাপিটল ভবনে দাঙ্গার পর থেকে ক্রিস্টি পরিণত হয়েছিলেন ট্রাম্পের একজন কড়া সমালোচকে।

এপ্রিল মাসে নিউ হ্যাম্পশায়ারের টাউন হলে ক্ষুরধার বক্তা ক্রিস্টি বলেছিলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন টিভি স্টার - এর চেয়ে বেশি কিছু না, কমও না। আপনাদের আমি বলে রাখতে চাই, তাকে যদি আবার হোয়াইট হাউসে ফেরত পাঠানো হয়, তাহলে আসল অনুষ্ঠানের চেয়ে তার পুনঃপ্রচার খারাপ হবার মতোই একটা ঘটনা ঘটবে। 

ক্রিস্টি ২০১০ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত নিউ জার্সি রাজ্যের গভর্নর ছিলেন। তবে একটি সেতুর লেন বন্ধ করে দেবার কেলেংকারির কারণে তার রাজনৈতিক জীবনের ওপর ছায়া পড়ে। একজন ডেমোক্রেটিক মেয়রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিশোধ গ্রহণের অংশ হিসেবে ওই ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ করা হয়।

গভর্নর নির্বাচিত হবার আগে ক্রিস্টি ২০০২ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের অধীনে নিউ জার্সির শীর্ষ কৌঁসুলি ছিলেন।

রস ডেসান্টিস

ফ্লোরিডার গভর্নর রস ডেসান্টিস অনেক দিন ধরে চেষ্টা করছেন ট্রাম্পের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে। মনে করা হয় যে তিনিই হচ্ছেন একমাত্র প্রার্থী যিনি মুখোমুখি লড়াইয়ে ট্রাম্পকে হারাতে সবচেয়ে বেশি সক্ষম।

ট্রাম্পের অনুমোদন পেয়েই গভর্নর হয়েছিলেন ডেসান্টিস। গত বছরে মধ্যবর্তী নির্বাচনে ১৫ লক্ষরও বেশি ব্যবধানে জয়ী হয়ে পুননির্বাচিত হন। ফ্লোরিডা রাজ্যে গত চার দশকের মধ্যে এত বড় ব্যবধানে কেউ পুননির্বাচন জেতেনি।

তার মেয়াদে এই প্রথমবারের মতো ফ্লোরিডায় রিপাবলিকান ভোটারদের সংখ্যা ডেমোক্রেট-সমর্থক ভোটারের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।

ডেসান্টিসের বয়স মাত্র ৪৪ বছর। তিনি হার্ভার্ড ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং মার্কিন রাজনীতিতে তাকে এখনো একজন নবাগত বলেই মনে করা হয়।

একসময় মার্কিন নৌবাহিনীতেও কাজ করেছেন ডেসান্টিস এবং সেময় কিছুদিনের জন্য ইরাকেও গিয়েছিলেন। তা ছাড়া ২০১৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত তিনি মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যও ছিলেন। সেসময় অবশ্য তিনি ছিলেন খুবই স্বল্প পরিচিত প্রতিনিধি-পরিষদ সদস্য।

তবে ২০১৯ সালে গভর্নর হবার পর তিনি দ্রুত বিখ্যাত হয়ে উঠতে থাকেন।

এ ভূমিকায় ডেসান্টিস উৎসাহের সাথে সাংস্কৃতিক লড়াই চালান। তিনি জাতিবৈচিত্র এবং সবার অন্তর্ভুক্তিসংক্রান্ত কর্মসূচিগুলোর অর্থায়ন বন্ধ করার জন্য করা একটি আইনের প্রতি সমর্থন দেন। পাবলিক স্কুলে জেন্ডার আত্মপরিচয় সম্পর্কে শিক্ষাদান, ড্র্যাগ শো, এবং শিশুদের জন্য জেন্ডার পরিচর্যা নিষিদ্ধ করেন। 

তিনি বন্দুক সংক্রান্ত আইন আরো শিথিল করেন এবং গর্ভপাতের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেন। এ ছাড়া তিনি ওয়াল্ট ডিজনির সাথেও এক আইনি লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছেন।

ডেসান্টিস তার এসব কাজকে রক্ষণশীল নেতৃত্বের এক ব্লুপ্রিন্ট হিসেবে তুলে ধরেছেন এবং তার সমর্থকরা বলেন – তিনি ট্রাম্পের এমন একজন বিকল্প হতে পারেন - যিনি সবরকম নাটুকেপনার বিরুদ্ধে।

মনে হচ্ছে ট্রাম্প ইতোমধ্যেই তার ওপর নজর রাখছেন এবং সামাজিক মাধ্যমে তিনি প্রায় প্রতিদিনই তার বিরুদ্ধে নানা আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন।

টিম স্কট

সেনেটর টিম স্কট হচ্ছেন একমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ যিনি মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চ ও নিম্ন উভয় কক্ষেই সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সেনেটে ২০১৩ সাল থেকে সাউথ ক্যারোলাইনার প্রতিনিধিত্ব করেছেন ৫৭ বছর বয়স্ক টিম স্কট।

এই রাজ্যে তিনি কয়েক দশক ধরে রাজনীতি করছেন এবং মে মাসে তিনি রিপাবলিকান মনোনয়ন পাবার লড়াইয়ে নামেন নগদ প্রায় ২২ মিলিয়ন ডলার হাতে নিয়ে – যা তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে অনেক বেশি।

তার শ্লোগান হচ্ছে 'পিছিয়ে পড়তে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের মোড় ঘুরিয়ে দেয়া' এবং আমেরিকার 'মহত্ত্বের সংস্কৃতিকে' পুনরুজ্জীবিত করা। টিম স্কট একজন তুলা ক্ষেত শ্রমিকের নাতি এবং 'একক মায়ের' সন্তান। তার সহকর্মীদের মধ্যেও তিনি জনপ্রিয়।

নিকি হ্যালি

নিকি হ্যালি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হবার লড়াইয়ে নামার কথা ঘোষণা করেন ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি। ট্রাম্পকে মোকাবিলা করার ইচ্ছা প্রকাশকারী প্রথম গুরুত্বপূর্ণ রিপাবলিকান প্রার্থী হচ্ছেন তিনি। ৫১ বছর বয়স্কা মিজ হ্যালিকে এক সময় রিপাবলিকান পার্টির তরুণ সম্ভাবনাপূর্ণ নেতাদের মধ্যে অন্যতম বলে মনে করা হতো। তবে গত কয়েক বছর ধরে তিনি খানিকটা যেন পাদপ্রদীপের আলো এড়িয়ে চলছেন।

তার জন্ম সাউথ ক্যারোলাইনাতে এবং তিনি পাঞ্জাবি শিখ অভিবাসী বাবা-মায়ের সন্তান। ২০০৯ সালে তিনি দেশের সবচেয়ে কমবয়েসি গভর্নর হন। সাউথ ক্যারোলাইনার রাজধানী থেকে কনফেডারেট পতাকা অপসারণের আহ্বান জানিয়ে তিনি সবার নজর কাড়েন ২০১৫ সালে।

নিকি হ্যালি ২০১৬ সালে বলেছিলেন যে তিনি ট্রাম্পের ভক্ত নন, তবে মি ট্রাম্প যখন তাকে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মনোনীত করেন তখন তিনি তা গ্রহণ করেছিলেন। তার মেয়াদের সময় একটি আলোচিত ঘটনা ছিল নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে ফিলিস্তিনি দূত ভাষণ দেবার সময় নাটকীয়ভাবে তার কক্ষ ত্যাগ।

প্রচারাভিযানের সময় তিনি এক ‘’নতুন প্রজন্মের’’ মার্কিন নেতৃত্বের কথা বলেছেন এবং আহ্বান জানিয়েছেন যে ৭৫ বছরের বেশি রাজনীতিবিদদের জন্য বাধ্যতামূলক মানসিক সক্ষমতা যাচাই করার জন্য যেন একটি পরীক্ষা প্রবর্তন করা হয়।

বিবেক রামস্বামী

৩৭ বছর বয়স্ক বিবেক রামাসোয়ামী গত ফেব্রুয়ারি মাসে ফক্স নিউজ চ্যানেলে এক অনুষ্ঠানে তার প্রার্থী হবার কথা ঘোষণা করেন। তাকে একজন ‘ডার্ক হর্স’ প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। 

এই ভারতীয়-আমেরিকানের কোন পূর্ব রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। তিনি একজন বায়োটেক উদ্যোক্তা, এবং ফক্স নিউজের টাকার কার্লসনের অনুষ্ঠানে তাকে নিয়মিত দেখা যেতো। এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি দর্শক পাওয়া কেবল টিভি অনুষ্ঠান।

বিবেক রামাসোয়ামী হার্ভার্ড ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট । তিনি বলে থাকেন যে যুক্তরাষ্ট্র এখন একটা আত্মপরিচয়ের সংকটে ভুগছে এবং এর পেছনে রয়েছে ধর্মবিশ্বাস, দেশপ্রেম এবং মেধাতন্ত্রের অবক্ষয়।

তিনি “ওক ইনকর্পোরেটেড: ইনসাইড কর্পোরেট আমেরিকা’স সোশ্যাল জাস্টিস স্ক্যাম” নামে একটি বইও লিখেছেন।

আসা হাচিনসন

আসা হাচিনসন দুই মেয়াদে আরকানসাস রাজ্যের গভর্নর ছিলেন। তিনি তার প্রার্থিতার কথা ঘোষণা করেন এপ্রিল মাসে এবিসি টিভিতে এক সাক্ষাৎকারে।

ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ফৌজদারি অভিযোগে অভিযুক্ত হবার পর মি. ট্রাম্পের উচিত প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানো।

তার বয়স ৭২ বছর এবং তিনি একজন সাবেক এটর্নি ও ব্যবসায়ী। রোনাল্ড রিগান প্রেসিডেন্ট থাকার সময় তিনি দেশের সবচেয়ে কমবয়স্ক ফেডারেল প্রসিকিউটর হয়েছিলেন। এ ছাড়া আসা হাচিনসন দুই মেয়াদে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য হয়েছিলেন, এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের অভিশংসনের প্রক্রিয়াতেও তিনি একজন কৌঁসুলি ছিলেন।

তিনি নিজেকে ‘ট্রাম্প-বলয়ের বাইরের’ একজন প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।

ল্যারি এল্ডার

ল্যারি এল্ডারের বয়স ৭১ এবং তিনি একজন আইনজীবী ও টক রেডিও উপস্থাপক। এর আগে ২০২১ সালে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল মাস্ক এবং টিকা সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত করার।

লস এঞ্জেলেসের মধ্যদক্ষিণ এলাকায় বড় হওয়া মি এল্ডার ডেমোক্র্যাটদের বিভিন্ন এজেন্ডা ও কাঠামোগত বর্ণবাদের একজন কড়া সমালোচক।

গ্লেন ইয়ংকিন

গ্লেন ইয়ংকিন ২০২১ সালে রাজনীতিতে নবাগত হলেও ভার্জিনিয়ার গভর্নর নির্বাচনে একজন ৪০ বছর অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে তুমুল হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন। তার আগে তিনি ২৫ বছর কার্লাইল গ্রুপ নামে একটি প্রাইভেট ইকুইটি ফার্মের সাথে জড়িত ছিলেন।

সেই নির্বাচনের পর থেকে ৫৫ বছর বয়স্ক ইয়ংকিন কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ তুলে দেয়া থেকে শুরু করে স্কুলে ক্রিটিক্যাল রেস থিওরি নামের এক বিতর্কিত বিষয় পড়ানো নিষিদ্ধ করার মতো পদক্ষেপ নিয়ে আলোচিত হয়েছেন।

তিনি একবার বলেছিলেন যে তিনি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না - কিন্তু এখন তিনি প্রার্থী হবার কথা বিবেচনা করছেন বলে খবর বেরিয়েছে, কারণ ট্রাম্প বলয়ের বাইরের একজন প্রার্থীর ব্যাপারে অর্থদাতারা আগ্রহী হচ্ছেন।

পেরি জনসন

পেরি জনসন ৭৫ বছর বয়স্ক একজন ব্যবসায়ী যিনি গত বছর মিশিগান রাজ্যের গভর্নর পদে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু যোগ্য বলে বিবেচিত হননি। তিনি মার্চ মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হবার দৌড়ে যোগ দেন।

তিনি বলছেন, প্রতি বছর ফেডারেল ব্যয়ের ২ শতাংশ কাটছাঁট করে অর্থনীতিতে গতিসঞ্চার করার এক পরিকল্পনা রয়েছে তার।

অন্য আরো যারা প্রার্থী হতে পারেন

ডগ বারগাম: ইনি একজন সাবেক সফটওয়্যার নির্বাহী এবং বর্তমানে নর্থ ডাকোটার গভর্নর। তিনি এর মধ্যেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হবার জন্য টিভি বিজ্ঞাপনের শুটিং করেছেন।

ফ্রান্সিস সুয়ারেজ: মায়ামির মেয়র যার জন্ম কিউবাতে। তিনি হচ্ছেন প্রথম মার্কিন রাজনীতিবিদ যিনি ক্রিপটোকারেন্সিতে তার বেতন নেন। তিনি প্রার্থী হবার কথা ভাবছেন বলে জানা গেছে।

উইল হার্ড: সাবেক টেক্সাস কংগ্রেসম্যান যিনি ২০২১ সালে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যপদ থেকে অবসর নিয়েছেন। তিনি বলছেন, মি. ট্রাম্প ও মি. বাইডেনের মধ্যে আবার আরেকটি নির্বাচনী যুদ্ধ হোক - তা খুব কম আমেরিকানই চায়।

লিজ চেনি: সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির মেয়ে লিজ একসময় রিপাবলিকান পার্টির একজন উদীয়মান তারকা ছিলেন, কিন্তু কট্টর ট্রাম্প বিরোধিতার কারণে ২০২১ সালে তিনি তার কংগ্রেস আসনটি হারান।

গ্রেগ অ্যাবট: টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট আমেরিকার অভিবাসন, গর্ভপাত এবং বন্দুক সংক্রান্ত আইনের মতো বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় বিতর্কে অংশ নিয়ে আলোচিত হয়েছেন।

 

ইত্তেফাক/এসআর