বিভিন্ন দাবিতে চলা বিএনপির আন্দোলন ভিন্নখাতে নিতে সংলাপের কথা বলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমির হোসেন আমু ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের উদ্দেশ্য হলো বিএনপিকে মূল দাবি থেকে মনোযোগ ভিন্নখাতে নেওয়া। লোডশেডিংয়ে বর্তমানে যে জনদুর্ভোগ, তা ধামাচাপা দিতে তারা এসব বক্তব্য দিচ্ছেন।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, পদক্ষেপ নেন তত্ত্বাবধায়ক দিন, পরে দেখা যাবে কি করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সংকট উত্তরণ প্রয়াসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা- একটি পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ডাইভারশন খুব ভালো জানে। দৃষ্টি ফেরাতে সবসময় অন্য কিছু করে। আমীর হোসেন আমুসহ অন্যদের সংলাপের বক্তব্য সামনে এসেছে। লক্ষ্য ডাইভার্ট করতে এই ইস্যু তৈরি। আমাদের লড়াই বিএনপিকে ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য নয়। মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই করছি আমরা। গোটা দেশের মানুষ আজকে আমাদের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করছে। দরকার হলে রাজপথে নামতে হবে।
দেশের স্বাধীনতার ৫২ বছরেও শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর পদ্ধতি তৈরি হয়নি উল্লেখ তিনি বলেন, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে গণতান্ত্রিক মানসিকতার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, যিনি গৃহবধূ থেকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছিলেন। তিনি সবার মতামতের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কারণ জনগণ তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তিনি দলের কথা চিন্তা করেননি। কিন্তু ২০১১ সালে শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করেছেন। এরপর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেদিন গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন দেশকে অনিশ্চয়তা ও সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়া হলো।
আওয়ামী লীগের হাতে গণতন্ত্র বারবার নিহত হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্র আমাদের অস্থিতে মজ্জায় ছিল। আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ একে একে গণতান্ত্রিক সব অধিকার হরণ করেছে। তারা জরুরি অবস্থা, সামরিক আইন এবং শেষে বাকশাল কায়েম করেছিল। আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না।
তিনি বলেন, মানুষ যা চায় আওয়ামী লীগ তার উল্টো করে। তাদের চরিত্র হলো ফ্যাসিবাদী। তারা উগ্রবাদী। তারা অন্যকে কথা বলতে দেয় না। গত ১৪ বছর ধরে হিংসাত্মক কথা বলে আসছে। তারা তো আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে মেরে বের করে দিয়েছে। তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ হলো ফ্যাসিবাদী ও সন্ত্রাসী।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, গণমাধ্যম ঠিকমতো স্বাধীনভাবে লিখতে ও বলতে পারেন না। কারণ ফ্যাসিবাদ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এরই মধ্যে অসংখ্য মামলা দায়ের করা হয়েছে। অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জাতিসংঘসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে।