অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দেওয়া ব্যান্ড সোলস পথচলার ৫০ বছর পূর্ণ করলো। ব্যান্ডটির সুবর্ণজয়ন্তী আয়োজন নিয়ে এখন নানা পরিকল্পনা করছেন এর সদস্যরা। ব্যান্ডটির সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ ইন্ডাস্ট্রির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইত্তেফাকের সঙ্গে কথা বললেন দলটির প্রধান জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী পার্থ বড়ুয়া।
‘সোলস’ ৫০ বছর পূর্ণ করলো। ব্যান্ডটির সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন ঘিরে বিশেষ কী করছেন?
পরিকল্পনা তো অনেকই আছে। তবে কতটা করতে পারব সেটা নির্ভর করবে স্পন্সরের ওপর। কারণ স্পন্সর ছাড়া পুরো অনুষ্ঠান তো নিজেদের খরচে করা সম্ভব না। তবে সেটা না পেলেও আমাদের পক্ষে যতটুকু করা সম্ভব ততটুকু নিশ্চয় করব। এর মধ্যে আমরা দর্শক ও শ্রোতাদের কাছ থেকে নতুন গান আহ্বান করেছি। তাদের পাঠানো গানগুলো থেকে সেরা ১০টি গান বাছাই করা হবে। পরে গানগুলো ভিডিও আকারে প্রকাশ করবো।
সোলসের এই দীর্ঘ যাত্রায় প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির খাতা কতটা পূরণ হয়েছে?
প্রাপ্তির জায়গা থেকে বলতে গেলে সবটাই আমাদের প্রাপ্তি। আমাদের অপ্রাপ্তি বলতে কিছু নেই। দীর্ঘ যাত্রায় এই অপ্রাপ্তি শব্দটি সোলসের সঙ্গে বেমানান।
এক সময় সোলসের গান নিয়মিত পাওয়া গেলেও দীর্ঘদিন ধরে সেই ধারাবাহিকতায় ব্যান্ডটি নেই। এর কারণ কী?
আমরা নতুন গান রেকর্ড করিনি তেমন না। ইতোমধ্যে নতুন ও পুরনো বেশকিছু গান প্রস্তুত করেছি। কিন্তু একসঙ্গে সেগুলো প্রকাশ করার জন্যই এতদিন অপেক্ষা করেছি বা আমাদের দর্শক ও শ্রোতাদের অপেক্ষায় রেখেছি। আসছে সেপ্টেম্বর মাস থেকে নিয়মিত গানগুলো প্রকাশ করবো। মাসে অনন্ত দুটি করে গান দর্শকরা পাবেন।
সোলসের অনেকে জনপ্রিয় গানের শিল্পী ছিলেন তপন চৌধুরী। কিন্তু সুবর্ণজয়ন্তীর সংবাদ সম্মেলনে তার উপস্থিতি বা কোনো ভিডিও বার্তা পাওয়া যায়নি। এর কারণ কী? তাকে ব্যান্ডের পরবর্তী আয়োজনে দেখা যাবে কি-না?
দেখুন, এখন আমরা সোলসের সঙ্গে যারা আছি তাদের নিয়েই কাজ করছি। আগে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে এখন কেউ কেউ আছেন, আবার অনেকেই নেই। তাছাড়া উনি দেশেও থাকেন না। থাকলে হয়তো তাকে বলতাম। এছাড়া আমরা তো কারও বায়োগ্রাফিও করছি না বা করব না। যারা আছি তারাই নিয়মিত গান করব। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে যুক্ত করার পরিকল্পনা আছে। এটাতে আসলে কে থাকলো কে থাকলো সেটা মুখ্য না। তপন দা তো প্রায় ৩০ বছর সোলসের সঙ্গে নেই। তিনি নিজেই সোলস ছেড়ে গেছেন। ছেড়ে যারা গেছেন তারা তো গেছেনই। সেগুলো নিয়ে আমরা ভাবছি না। ৩০ বছর যুদ্ধ করেছি, বাকি সময়েও কারও কাছ থেকে কিছু আশা করি না!
নকীব খানও সোলসের অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনিও পরে নতুন ব্যান্ড তৈরি করেছেন। পুরনো সদস্যরা কেন বের হয়ে গেছেন?
আসলে সোলস তো চট্টোগ্রাম কেন্দ্রীক ব্যান্ড ছিল। তারা হয়তো ঢাকা মুভ করার কারণে সোলস ছেড়েছিলেন। তবে নকীব খান ব্যান্ড ছাড়ার সময় আমি সোলসের সঙ্গে ছিলাম না। তাই এই বিষয়টি নিয়ে তেমন কিছু জানিও না, আর মন্তব্যও করতে চাই না। তবে তাদের সঙ্গে এখন ভালো সম্পর্ক আছে বলেই তারা আমাদের খোঁজখবর নেন।
অনেকেই বলেন ব্যান্ডের যুগ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। আপনি তো কয়েক যুগ ব্যান্ডের সঙ্গেই আছেন। আপনার দৃষ্টিতে ব্যান্ডের বর্তমান অবস্থা কেমন দেখছেন?
একটি স্বাধীন দেশে যেকোনো কথা বলার অধিকার সবার আছে। তাদের মতো তারা বলে যাচ্ছেন আমরা আমাদের মতো করে কাজ করে যাচ্ছি।
কপিরাইট ও গানের রয়্যালিটি নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আপনার অভিজ্ঞতা কেমন?
নিজেরটা নিজে বলা তো ঠিক হবে না। তাই এই বিষয়টি নিয়ে আপনারা সাংবাদিকরা কথা বলেন! আমি কখনও আমার গান অন্যকে প্রকাশ করার অনুমতি দিইনি। এমনকি তারা প্রকাশ করার আগে আমাকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজনও মনে করেনি। এখন এটা নিয়ে আইনের আশ্রয় নেওয়া যায়। তবে যাদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেবো তারাও তো আমাদের লোক!
অভিনয়েও মাঝে মাঝে পার্থের দেখা মেলে। নতুন কোনো কাজ আসছে কি-না?
না, একটি কাজের কথা থাকলেও গরমের কারণে করছি না। তবে শীত এলে হয়তো কিছু কাজ করা হবে।