পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া পৌর নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে পৌর এলাকার একদল বিপথগামী লোকের কারণে ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হচ্ছে। নির্বাচনী আচরণবিধি উপেক্ষা করে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর উপস্থিতিতে উঠান বৈঠকের নামে সভা-সমাবেশ চলছে। যা নির্বাচনী আচরণ বিধির পরিপন্থী।
এ ছাড়াও উঠান বৈঠকের নামে সভা-সমাবেশে উস্কানিমূলক বক্তব্য নির্বাচনী পরিবেশকে বিঘ্নিত করছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বহারা অধ্যুষিত এলাকার একাধিক হত্যা মামলার আসামিরা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ও তার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে।
জানা যায়, নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু ভান্ডারিয়া পৌর নির্বাচনে নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে যা নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে এখানকার মানুষকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে এবং কালোটাকা ছড়িয়ে ভোটের পরিবেশকে নষ্ট করছে। যেখানে সরকার প্রধান, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীরা সদস্যরা নির্বাচন স্বচ্ছ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেখানে একটি পৌরসভা নির্বাচনে সরকারী দলের কতিপয় নেতা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানান অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
পৌরবাসীর দাবি, নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতরা এ পরিস্থিতিতে কি ভূমিকা রাখছেন তা তাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। সরেজমিনে না আসলে এখানকার ভীতিকর পরিবেশের সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা সম্ভব নয়। বার বার নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন হলেও নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা এ পরিস্থিতিতে তেমন কার্যকর কোনো ভূমিকা দেখাতে পারছেন না।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনার (ইসি) প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় হুঁশিয়ারি করেন। তারপরও ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ও নেতা-কর্মীরা নির্বাচনী আইন পরিপন্থী কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছেন। বহিরাগতরা মহড়া ও সমাবেশ করে। উঠান বৈঠকের নামে এসব সমাবেশে পার্শ্ববর্তী জেলা-উপজেলা থেকে লোক ভাড়া করে এনে উত্তেজনামূলক বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। এসব বক্তব্য এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করছে। এসব বক্তব্যের প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শান্ত এলাকাকে অশান্তকারীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রশাসনের নাকের ডগায় সন্ত্রাসীরা গাড়িবহর নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নির্বাচন আচরণবিধি বার বার লঙ্ঘন হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা। এতে ভোটারদের মাঝে কিছুটা হতাশা দেখা দিচ্ছে। ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কোনো কার্যকর ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। কালো টাকা ছড়িয়ে সকলকে ম্যানেজ করা হচ্ছে। প্রশাসনের কার্যকর নজরদারি না থাকায় ভান্ডারিয়া এখন এক ভীতিকর এলাকা।
পিরোজপুর জেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান খলিফা বলেন, প্রার্থীদের নির্বাচনী বিধি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। বহিরাগতদের বিষয়ে ওসিকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনী আইনে বলা আছে, পূর্ব থেকে প্যান্ডেল নির্মাণ করে কোনো মঞ্চ করে সমাবেশ করা যাবে না। যদি কোনো প্রার্থী করে থাকে প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।