বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১
The Daily Ittefaq

অসচেতনতায় প্রতিবছর জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যান্সারে মারা যায় ১২ হাজার নারী

আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৩, ১৩:৫৪

অসচেতনতায় প্রতিবছর জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যান্সারে প্রায় ১২ হাজার নারী মারা যায়। এই দুই ক্যান্সার প্রাথমিকে ধরা পড়লে, প্রতিরোধ করা সম্ভব। নারীদের এই ক্যান্সারের স্ক্রিনিং সরকার বিনামূলে দিয়ে থাকে। এরপরেও শুধুমাত্র সচেতনতার অভাবে প্রতিবছর নারীরা আক্রান্ত হচ্ছে এবং মৃত্যুবরণ করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনেও আমাদের এই অসংক্রমক রোগে মৃত্যু কমিয়ে আনতে হবে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেশালাইজড হাসপাতালের লেকচার হলে আয়োজিত ‘জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্টানের ভূমিকা’ বিষয়ক কর্মশালায় বক্তারা এ কথা বলেন।

গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে বিনামূল্যে জরায়ুমুখের ক্যান্সার স্ত্রিনিং করানোর সুযোগ নারীরা পেলেও শহরে সেই ব্যবস্থা নেই। ফলে শহরের নারীদের সচেতন করতে বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অর্ন্তভূক্ত করতে রাজধানীর ৯০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আজ যে দুটো অসুস্থতা জরায়ুমুখ ক্যান্সার ও স্তন ক্যান্সার নিয়ে কথা বলা হচ্ছে, এই দুটি ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। একটি সমাজ কতটা সভ্য, তা অনুমান করা যায় সেই সমাজের নারীরা কেমন আছে, সেই ব্যবস্থার উপর। জরায়ুমুখের ক্যান্সারের জীবানু ১০ থেকে ১৫ বছর আগে জরায়ূতে বাসা বাধে, যা স্ত্রিনিংয়ের মাধ্যমে সহজে সনাক্ত করে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। আর স্তন ক্যান্সার একটি নিদিষ্ট সময়ে সনাক্ত হলে সেটিও প্রতিরোধ সম্ভব।

তিনি বলেন, ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সের নারীদের জরায়ুমুখ স্ক্রিনিং করাতে হবে এবং তথ্য ডিজিটাল ডাটাবেইজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে তিনি বর্তমান সময়ের আলোচিত বিষয় ডেঙ্গু নিয়ে বলেন, আমরা যেঙ্গু নিয়ে কাবার অবস্থায় আছি। এই ডেঙ্গু প্রতিরোধ যোগ্য। আমরা যদি নিজেদের বাড়ি-ঘর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখি তাহলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা কঠিন কিছু নয়। আমরা এ জন্যে শিক্ষার্থীদের বলেছি, প্রতি তিনদিনে একদিন তাদের বাসা-বাড়ির চারপাশ পরিস্কার করবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জরায়ু মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং কর্মসূচির প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. আশরাফুন্নেসা বলেন, জরায়ু মুখের ক্যান্সারের জীবানু একটি ধীরগতির ভাইরাস, যা ক্যান্সারে রূপ নেয়ার ১০ থেকে ১৫ বছর আগে জরায়ুতে প্রবেশ করে। আমরা স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে সহজেই এই ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারি।

তিনি বলেন, আমাদের ২২ মিলিয়ন মানুষকে টার্গেট করেছি, এরমধ্যে ইতিমধ্যে ২০ শতাংশ নারীর স্ক্রিনিং করাতে পেরেছি। কিন্তু এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো দরকার। নারীরা স্ক্রিনিয়ে আসতে চায় না। এ জন্যে এবার মায়েদের সচেতন করতে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষিত করার উদ্যোগ নিয়েছি।

সভাপতির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আগে স্কুলের ক্লিনিক ব্যবস্থা চালু ছিল, সেটা আবার চালু করতে হবে। এছাড়া স্কুলের প্রাতরাশ সমাবেশে একদিন করে এ বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ আলোচনা করলে উপকৃত হবো। এ ছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও এলজিইডি বিষয়ক মন্ত্রনালয় সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে বলে জানান।

তিনি ফেসবুকে মানুষের অতিমাত্রায় আশক্তির বিষয়ে বলেন, চায়নাতে রাত ১০টার পরে ফেসবুক বন্ধ থাকে, আমাদের দেশেও এমন কোন নিয়ম করা যায় কি না তা ভেবে দেখতে বলেন।

ইত্তেফাক/এসকে