নীলফামারীর সৈয়দপুরে চাহিদার প্রায় তিন ভাগের একভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এ কারণে ঐ এলাকায় তীব্র লোডশেডিং চলছে। এর ফলে ভোগান্তি পোহাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ। লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে শিল্প-কলকারখানার উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নর্দার্ন ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিন থেকেই চাহিদার তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
সৈয়দপুর বিসিক শিল্পনগরীর বিভিন্ন শিল্প-কারখানাসহ শহরের পাড়ামহল্লায় গড়ে ওঠা রপ্তানিমুখী মেশিনারি পণ্য, যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারী শতাধিক লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ও ঝুট কাপড় থেকে পোশাক তৈরিকারী দুই শতাধিক ক্ষুদ্র গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের কাজ একেবারে বন্ধ হয়ে পড়েছে। এর সঙ্গে অন্যান্য কারখানাও ধুঁকছে। অর্ধ শতাধিক বেকারি, জুতা তৈরির দোকান, পাটজাত পণ্য নির্মাণ কারখানা, পরিত্যক্ত পলিথিন থেকে রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে গুলের কৌটা ও খেলনা বানানোর ফ্যাক্টরিও স্থবির হয়ে পড়েছে।
সেই সঙ্গে আবাসিক বিদ্যুতের অভাবে প্রখর রোদের কারণে সৃষ্ট তাপপ্রবাহে জনজীবনে ত্রাহি অবস্থা দেখা দিয়েছে। বাসাবাড়ি, অফিস, বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টেকা দায় হয়ে পড়েছে। দাপ্তরিক কাজসহ গৃহস্থালি কাজেও সমস্যা হচ্ছে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে নেই গ্রাহক। ব্যাটারিচালিত চার্জার ভ্যান, রিকশা, অটো, ইজিবাইক বিদ্যুৎ না পেয়ে চার্জ করতে পারছে না।
সবচেয়ে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে বয়স্ক, শিশু, শিক্ষার্থী আর রোগীদের নিয়ে। বাসাবাড়িতে অবস্থান করলে আইপিএস বা চার্জার লাইট বা ফ্যান চালিয়ে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন। চার্জ করার মতো সামান্য সময়ও বিদ্যুৎ না পেয়ে। এতে শিশুরা ও বয়স্ক এবং অসুস্থ নারীপুরুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
এদিকে ক্লাস চলাকালে বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে ঘেমে দুর্বিষহ কষ্ট করতে হচ্ছে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরাসহ শিক্ষক কর্মচারীরাদের। অন্যদিকে হাসপাতালে বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকার অসহ্য ভোগান্তিতে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন। অনেকে রাতে হাসপাতাল ছেড়ে অন্ধকারেই বাড়ি ফিরেছে।
ক্ষুদ্র গার্মেন্টস কারখানা এম আর ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মতিয়ার রহমান দুলু বলেন, করোনা পরবর্তী সব সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে সৈয়দপুরের রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানার মালিকরা যখন আবার মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন, ঠিক তখনই লোডশেডিং বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় উৎপাদন প্রায় ৭০ শতাংশ কমে গেছে।
নেসকো সৈয়দপুর অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁঞা জানান, সৈয়দপুরে প্রতিদিনের বিদ্যুতের চাহিদা ৩০ মেগাওয়াট। কিন্তু কেন্দ্রীয়ভাবে সৈয়দপুরের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১২ মেগাওয়াট। অর্থাৎ অর্ধেকেরও বেশি ঘাটতি। তাই সারা দিন লোডশেডিং চলছে। তিনি আরও বলেন, বরাদ্দ পেলেই পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক