মানবসভ্যতার জয়যাত্রায় বিশ্বসেরা মুসলিম স্থাপত্য:
ইস্পাহান মসজিদ: এটি ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের গুরুত্বপূর্ণ নগরী ইস্পাহানের কেন্দ্রীয় মসজিদ। সপ্তম থেকে দশম শতাব্দীকালব্যাপী দারুণ সৌন্দর্য ও নান্দনিকতায় গড়ে ওঠা এই মসজিদকে বলা হয় মস্ক অব ইস্পাহান। বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন এই মসজিদ-স্থাপত্য নিদর্শনকে ২০১২ সালে UNESCO ‘বিশ্ব প্রত্ন নির্দশন’ (World heritage) ঘোষণা করেছে।
স্পেনের আল হামরা: মুহাম্মদ ইবনু নাসর (১২৩৮-১২৭৩ খ্রি.) তার আবাসন ও প্রশাসনিক প্রয়োজনে আল হামরা প্রাসাদ নির্মাণের সূচনা করেন। আল হামরার দেওয়ালে স্বর্ণ ও পাথরে খোদাইকৃত ক্যালিওগ্রাফি অত্যন্ত বিস্ময়কর। পবিত্র কুরআন, হাদিস, আরবি কবিতা ও উপদেশাবলি আল হামরার কক্ষ, খুঁটি, মিনার ইত্যাদিকে সুশোভিত করেছে। এতে ব্যবহৃত হয় শত শত মণ স্বর্ণ, মূল্যবান হিরকখণ্ড ও মণিমুক্তা। ১৯৮৪ আল হামরাকে ইউনেসকো মানবতার সাংস্কৃতিক বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করেছে।
সুলায়মানিয়া মসজিদ: ১৫৫০ থেকে ১৫৫৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে সুলায়মানিয়া মসজিদ নির্মিত হয়। এই মসজিদই পৃথিবীর অন্যতম প্রথম মসজিদ, যার নির্মাণকাঠামোতে চারটি মিনারের সন্নিবেশ ঘটেছে।
মরক্কোর চেফচাওয়েন: মরক্কোর রাইফ পর্বতের পাশের চেফচাওয়েনে ১৫ শতকে গড়ে ওঠে নানান স্থাপত্য নিদর্শন। মায়াবী নীল রঙের এসব স্থাপত্য আজও মুসলিম সংস্কৃতির জীবন্ত কিংবদন্তি।
নাসির আল মুলক মসজিদ: ইরানের সুপ্রসিদ্ধ শিরাজনগরে অবস্থিত নাসির আল মুলক মসজিদ। মসজিদটিতে ব্যবহূত হয়েছে রঙিন গ্লাসের অলংকরণ। যখন মসজিদের জানালা সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়, তখন মসজিদের ভেতরে লাল-গোলাপি আলোর এক অনন্য রহস্যময় আবেশ তৈরি হয়।
দ্বিতীয় হাসান মসজিদ: ১৯৯৩ সালে মরক্কোর উপকূলীয় শহর কাসাব্ল্যাংকায় নির্মিত হয় দ্বিতীয় হাসান মসজিদ। এই মসজিদের এক-তৃতীয়াংশ আটলানন্টিক মহাসাগরে অবস্থিত। ২১০ মিটার উঁচু মসজিদটির মিনার, যা প্রায় ষাটতলা বিল্ডিংয়ের সমান। মিনারের ওপরে বসানো হয়েছে বিশেষ লেজার রশ্মি, যা সমুদ্রগামী নাবিকদের পবিত্র কাবা শরিফের পথ প্রদর্শন করে।
শেখ যায়েদ গ্র্যান্ড মস্ক: শেখ যায়েদ গ্র্যান্ড মস্ক সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে বড় মসজিদ। লাখ লাখ স্বচ্ছ পাথরে তৈরি বৃহত্তম ঝাড়বাতি এই মসজিদকে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। নির্মাণকাজে মসজিদটির নকশায় ব্যবহূত হয়েছে মার্বেল পাথর, মৃতশিল্প, স্ফটিক পাথর ইত্যাদি।
বুর্জ আল আরব: বুর্জ আল আরব, পৃথিবীর চতুর্থ সুউচ্চ হোটেল। জাঁকজমকপূর্ণ হোটেলটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের জনপ্রিয় শাসক প্রয়াত শেখ যায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের পারিবারিক সম্পত্তি।
লেখক: ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ, কাপাসিয়া, গাজীপুর