পার্বত্য বান্দরবানের লামায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে দুই ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। বন্যার পানিতে ডুবে সরকারি খাদ্যগুদামের প্রায় দেড়শ মেট্রিক টন চাল ও গম নষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলার বিভিন্নস্থানে পাহাড় ধসের ঘটনায় অন্তত পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর বিধস্ত হয়েছে। বন্যার পানিতে বাজার, বাড়ি-ঘর, মাছের প্রজেক্ট, আবাদকৃত কৃষিজমি ও বীজতলা তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
লামা পৌরশহর ও উপজেলা সাতটি ইউনিয়নের বন্যা প্লাবিত বিভিন্ন এলাকা থেকে টানা তিনদিন পর বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকে বন্যার পানি কিছুটা নামতে শুরু করেছে। মানুষজন আশ্রয়ন কেন্দ্র থেকে বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে নিচু এলাকাগুলো পাহাড়ি ঢল বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় সেসব এলাকার মানুষ এখনও খুবই কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।
লামা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল জানান, উপজেলা সদরের সকল অফিস-আদালতসহ সরকারি সকল দপ্তর পানির নিচে প্রায় দিন দিন ডুবে ছিল। বিভিন্নস্থানে ৫২টি আশ্রয়নকেন্দ্রে পাহাড়ি ঢল ও বন্যা প্লাবিত এলাকার লোকজনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। দুইজন লোক প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কুমারি এলাকায় ঘরের মাটির দেয়াল ধসে করিমা বেগম (৩৫) নামে এক নারী মৃত্যু বরণ করেছেন। অফরদিকে উপজেলা রূপসীপাড়া ইউনিয়নে মাতামুহুরী নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তবে তার নাম জানা যায়নি।
লামা উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-এলএসডি) তিমির কুমার দে জানান, গত সোমবার রাতের দিকে হঠাৎ পানি বাড়তে শুরু করে। এ সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাদ্যগুদাম থেকে চাল-গম নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা তবে। তবে পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় তার সড়ানো আর সম্ভব হয়নি। তিমির কুমার দে বলেন, খাদ্য গুদামে প্রায় ২৮৩ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য ছিল। এর মধ্যে প্রায় ১১৫-১২০ মেট্রিক টন চাল ও গম বন্যা পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সার জানান, তিনদিন পানিবন্দি থাকার পর লামা পৌরশহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। পৌরশহরসহ উপজেলার প্রায় এলাকা পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।