জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, এমপি এবং দলের মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম ১৫ আগস্টের শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিবৃতি প্রদান করেছেন।
জেপির নেতৃদ্বয় বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের কালরাতে স্মরণকালের ঘৃণ্যতম ও বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল। যে হত্যাকাণ্ডে পৈশাচিক ঘাতকদের নির্মম বুলেটের আঘাতে শাহাদতবরণ করেছিলেন জাতির পিতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, তৎকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, ইতিহাসের বরপুত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.), শেখ কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেল, শেখ কামালের স্ত্রী বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ সুলতানা কামাল, শেখ জামালের স্ত্রী পারভীন জামাল রোজী, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মনি, বিশিষ্ট কৃষকনেতা ও মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব কর্নেল জামিলসহ ১৮ জন নারী-পুরুষ ও শিশু। এই নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ডে যারা শহিদ হয়েছিলেন আমরা তাদের স্মরণ করছি বিনম্র শ্রদ্ধায় ও হৃদয়ের গভীরতম ভালোবাসায়। একই সঙ্গে আমরা তাদের সবার রুহের মাগফেরাত কামনা করি।
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে যারা মুজিব আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধকে চিরতরে মুছে ফেলতে চেয়েছিল আজ তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। অন্যদিকে মুজিব আদর্শ আমাদের ভৌগোলিক সীমারেখা অতিক্রম করে বিশ্বব্যাপী নির্যাতিত, শোষিত মানুষকে মুক্তির পথ দেখাচ্ছে। বাঙালি জাতিও আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধের পথে ফিরে এসেছে। সেই পথ অনুসরণ করে জাতি আজ বিশ্ববাসীর সম্মুখে স্বপরিচয়ে, মহিমায় গৌরবান্বিত হয়েছে। বাঙালি জাতি আজ ঐক্যবদ্ধভাবে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছে। এই সংগ্রামের লক্ষ্য হলো বঙ্গবন্ধুর আরাধ্য সোনার বাংলা গড়ে তোলা। এবারের জাতীয় শোক দিবসে তাই আমাদের শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে সোনার বাংলা গড়ার শপথ গ্রহণ করতে হবে। ৪৮তম জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতীয় পার্টি-জেপির পক্ষ হতে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রথম দিন : আজ মঙ্গলবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৬টায় জেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দলের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন। সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডিস্থ ৩২ নাম্বার রোডে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ। সকাল সাড়ে ৯টায় বনানী কবরস্থানে বেগম মুজিবসহ ১৫ আগস্টে নিহত সব শহিদের এবং পরে জেপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার মাজার জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণে শরিক হবেন। এছাড়াও আগামীকাল বাদ জোহর সব মসজিদ ও ধর্মীয় অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনায় ১৫ই আগস্টে শহিদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হবে।
দ্বিতীয় দিন : ১৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন দলের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, এমপি। উক্ত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি মন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিশেষ অতিথি শাজাহান খান এমপি সাবেক মন্ত্রী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। হাসানুল হক ইনু এমপি সাবেক মন্ত্রী ও সভাপতি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), কমরেড দিলীপ বড়ুয়া সাবেক মন্ত্রী ও সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, মনজুরুল হাসান বুলবুল সিনিয়র সাংবাদিক। এছাড়াও জাতীয় ও বরেণ্য এবং বুদ্ধিজীবীগণ বক্তব্য রাখবেন।