মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

স্পর্শকাতর স্থানে গরম খুন্তি দিয়ে গৃহকর্মীকে নির্যাতন, অভিযুক্ত স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার 

আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৩, ২০:৪৯

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের গোলামবাজার রোড এলাকায় মালিকের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহকর্মীকে বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে গৃহকর্মীর হাত-মুখ বেঁধে গরম খুন্তি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে আগুনের ছেঁকা দিয়েছে।  

সোমবার (২১ আগস্ট) দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় ভিকটিমের মা শিমু বেগম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। টানা চার ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত গৃহকর্তা ও তার স্ত্রী নাসরিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

জানা যায়, গত ১০ আগস্ট ভিকটিমের মা পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করলে মুমূর্ষ অবস্থায় পুলিশ গৃহকর্মীকে উদ্ধার করেছে। উদ্ধারের পর তার মায়ের হেফাজতে দিয়ে মামলা করার পরামর্শ দেন পুলিশ। ভিকটিমের মায়ের অভিযোগ তিনি লিখিত অভিযোগ জমা দিলে থানার কর্তব্যরত এসআই নাসিরুজ্জান প্রভাবশালী স্বপনের কাজ থেকে ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়ে মামলা নিতে দশ দিন ধরে গরিমষি ও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। গত রোববার (২০ আগস্ট) বিভিন্ন অনলাইনে নিউজ প্রকাশিত হলে পুলিশ প্রশাসনের টনক নড়ে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেরানীগঞ্জ সার্কেল শাহাবুদ্দিন কবির ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ জামান টানা চার ঘণ্টার সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে স্বপন ও তার স্ত্রী নাসরিনকে আটক করতে সক্ষম হয়। 

ভিকটিম জানান, এক বছর আগে স্বপনের স্ত্রী নাসরিন তাকে তার বাসায় গৃহকর্মীর কাজ দেন। ছয় মাস পর্যন্ত তারা ভালো আচরণ করে। মালিক স্বপনের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় চুরির মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে একমাস একটি রুমে আটকে রাখে। সারাদিনের মধ্যে শুধু রাতে একবার খাবার দিতো। গভীর রাত হলেই হাত, মুখ ও পাঁ বেঁধে খুন্তি পোড়া দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে ছেঁকা দিয়ে ঝলসে দিয়েছে তারা দুজন।  

বাংলাদেশ মানবাধিকার (সিপিআর) কেরানীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহীন আলম বলেন, থানায় আইনি সহযোগীতা পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। দারোগা নাসিরুজ্জান ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়ে ১০ দিনেও অভিযুক্ত স্বপন ও নাসরিনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ ধরণের কর্মকাণ্ডে পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। তিনি এসআই নাসিরুজ্জানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান।  

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবির জানান, এ নির্যাতনের ঘটনায় এসআই নাসিরুজ্জানের গাফলতির কারণে পুলিশে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইত্তেফাক/পিও