শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিভাবক সমাবেশ শেষে শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ

আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২৩, ১০:২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় স্থানীয় পৌর কাউন্সিলরসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনায় আরও শিক্ষক আহত  হয়েছেন। 

ভুক্তভোগী শিক্ষক তানভীর আহমেদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে গেছেন।

অপর দুই শিক্ষক ফারুক আহমেদ ও গনেস চন্দ্র দাস হামলার শিকার হন।

মারধরের শিকার শিক্ষক তানভীর আহমেদ অভিযোগ, সমাবেশে পরীক্ষার ফলাফল খারাপের জন্য শিক্ষকদেরকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেন কয়েকজন অভিভাবক। এসময় প্রধান শিক্ষক ছাড়া অন্য শিক্ষকদেরকে সমাবেশে বসার ও কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। সমাবেশ শেষে বিদ্যালয়ের দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে বিষয়টি নিয়ে সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলছিলাম। এসময় আখাউড়া পৌর সভার ৮নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবুল মিয়া, দেবগ্রাম গ্রামের শেখ সোহেল ও জসিম উদ্দিন দেওয়ানসহ  বেশ কয়েকজন অভিভাবক এসে আমাকে কিল ঘুষিসহ মারধর করে। এসয়ম শিক্ষক ফারুক আহমেদ ও গনেস চন্দ্র দাস আমাকে রক্ষা করতে এসে তারাও হামলার শিকার হয়।

তিনি বলেন, শেখ সোহেল হুমকি দিয়েছেন আমি বিদ্যালয়ে গেলে আমার হাত পা ভেঙে ফেলবে। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষক ফারুক আহমেদ বলেন, শিক্ষকদেরকে অপমান করার জন্য কিছু লোককে সাজিয়ে সমাবেশে আনা হয়। তানভীর এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলছিল। এসময় তারা তার ওপর চড়াও হয়।

তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক কোনো ক্লাশ নেয় না। প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া অনেক ছাত্রছাত্রীকে চূড়ান্ত পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এজন্যই ফলাফল খারাপ হয়েছে। সমাবেশে বিষয়গুলো আমাদেরকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবুল মিয়া বলেন, আমি কোনো মারধর করিনি। তর্কবিতর্ক হয়েছে শুধু তার সঙ্গে।

অভিযোগ অস্বীকার করে শেখ সোহেল বলেন, আমি ওই শিক্ষককে মারধর করিনি। উল্টো তিনি আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। হুমকি দেওয়ার কথা সত্য নয়।

দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মাহফুজুর রহমান বলেন, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। পরে শুনেছি। খোঁজ খবর নিয়ে বিস্তারিত জানাবো।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন জানান, এ ব্যপারে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। শিক্ষকের ওপর হামলা হয়ে থাকলে ঘটনাটি দুঃখজনক।

এ ব্যাপারে ইউএনও অংগ্যজাই মারমা জানান, এই সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ তিনি পাননি।

এবছর এসএসসি পরীক্ষায় আখাউড়া উপজেলার বিদ্যালয়গুলোর ফলাফল খারাপ হয়। দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৩২ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৭২ জন পাস করেছে। পাসের হার ৫৪ দশমিক ৫৫। শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নে বিদ্যালয়গুলোতে অভিভাবক সমাবেশ করছে শিক্ষা অফিস। এনিয়ে দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।

ইত্তেফাক/আরএজে