কক্সবাজারের কলাতলীর কটেজ জোনে নৃত্যের জন্য ঢাকা থেকে আনা দুই শিল্পীকে জোরপূর্বক সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে সোলায়মান শামীম (২৩) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী এক কিশোরী কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় ৩ জনের নামসহ অজ্ঞাত আরও দুইজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে কলাতলী সড়কের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের বিপরীত পাশের কটেজ জোনের ‘রাজন কটেজ’ থেকে অভিযুক্ত শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে সোমবার রাতে একই কটেজে ওই দুই কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠে।
গ্রেপ্তার শামীম কক্সবাজার পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাজের পাড়ার সাইফুল ইসলামের ছেলে। এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন, হারবদল ও রশিদ ড্রাইভার।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ও তার তিন বান্ধবী ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে কক্সবাজার বেড়াতে আসেন। ভুক্তভোগীর এক বান্ধবীর পূর্বপরিচিত এক লোকের সঙ্গে তারা এই ভ্রমণে আসেন। কক্সবাজার এসে তারা কলাতলী সড়কের সুগন্ধা পয়েন্টের হোটেল মেরিন প্লাজায় কক্ষ ভাড়া নেন। পরে ৪ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে ভুক্তভোগী ও তার এক বান্ধবী হোটেলের সামনের রাস্তায় কাকঁড়া খেতে আসলে অভিযুক্তরা তাদের জোরপূর্বক রাজন কটেজে তুলে নিয়ে যায়। সেখানে ভিন্ন ভিন্ন কক্ষে আটকে রেখে তাদের দুইজনকে রাতভর ধর্ষণ করে অভিযুক্তরা। এরপর ৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টায় ওই দুই কিশোরীকে বাস টার্মিনাল নিয়ে গিয়ে চট্টগ্রামগামী মারসা গাড়িতে তুলে দেন। পরে বাস রামু পৌঁছালে বাদী অসুস্থ হয়ে বাস থেকে নেমে গেলেও অপরজন কক্সবাজার ত্যাগ করেন। এরপর ভুক্তভোগী রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়। পরে রামু হাসপাতালের চিকিৎসকরা পুলিশকে খবর দেয়।
রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তা (টিএইচও) ও আবাসিক চিকিৎসক নোবেল কুমার বড়ুয়া বলেন, ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ধর্ষণের কথা শুনে আমরা রামু পুলিশকে খবর দেই। পরে পুলিশ ওই কিশোরীকে হেফাজতে নিয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় অজ্ঞাতনামা দুইজনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা করেছেন। ওই মামলার তিনজনকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা গেলেও বাকি দুইজনকে এখনো চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। মামলার প্রধান আসামিকে টুরিস্ট পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনাটি পর্যটন জোনে হওয়ায় তারা তদন্ত করবেন।
টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিওনের সহকারী পুলিশ সুপার শাহরীন আলম বলেন, মামলার আসামিকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। তার রিমান্ডের আবেদন করা হবে। এছাড়া মামলাটি তদন্ত করবেন টুরিস্ট পুলিশ ইনস্পেক্টর গাজী মিজানুর রহমান।
এই কটেজ জোনে ২০২১ সালের ২২ ও ২৮ ডিসেম্বর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের আরও ঘটনা ঘটেছিল। কলাতলীর কটেজ জোন পর্যটনের জন্য গলারকাঁটা হয়ে উঠেছে। বছরের কোনো না কোনো সময়ে কটেজ এলাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটে।