নিউইয়র্কের আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়াম সাক্ষী হলো এক নতুন ইতিহাসের। গত পরশু এই স্টেডিয়ামে ইউএস ওপেনে মহিলাদের সিংগেলসে ফাইনালে বিশ্বের ১ নম্বর ও মহিলা সিংগেলসের ২ নম্বর টেনিস খেলোয়াড় এরিনা সাবালেঙ্কাকে হারিয়ে এই ইতিহাস লেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের তরুণী টেনস তারকা কোকো গাউফ। এদিন শুরু থেকেই ছন্দে ছিলেন বেলারুসের টেনিস সুন্দরী সাবালেঙ্কা। প্রথম সেটে সহজেই জিতে যায় কোকোর বিপক্ষে।
তবে এরপরই যেন ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন গল্প দেখেছে স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকা প্রায় ২৪ হাজার দর্শক। দুই ঘণ্টা ছয় মিনিট ধরে চলা এই খেলায় কোকো প্রথম সেটে ২-৬ ব্যবধানে হারের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেটে ৬-৩, ৬-২ জিতে উঁচিয়ে ধরেন নিজের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা। এতে করে সেরেনা উইলিয়ামসের (১৯৯৯) পর প্রথম টিনেজার হিসেবে ইউএস ওপেন জিতলেন এই তরুণী।
বর্তমানে কোকার বয়স মাত্র ১৯, এর আগে যখন তার বয়স ১৫ বছর তখন তার গ্র্যান্ড স্ল্যামে অভিষেক হয়। মূলত এরপর থেকেই আলোচনায় উঠে এসেছেন তিনি। তার ভেতর সম্ভাবনাময় তারকার ছাপ খুঁজে পান টেনিস পণ্ডিতরা। তবে এদিনের ফাইনালে ফেবারিট হিসেবে এগিয়ে ছিলেন বেলারুশকন্যাই। কারণ টেনিস র্যাকিং হিসেবে এগিয়ে রয়েছেন তিনি আর সর্বশেষ পারফরম্যান্সও দুর্দান্ত।
এদিকে ম্যাচ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে শুয়ে খুশির কান্নায় ভেঙে পড়েন। এরপরে কিছুটা ধাতস্থ হয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে সৌজন্যমূলক করমর্দন করেন তিনি। তার পরেও যেন অবিশ্বাস্য মুহূর্তের রেশ কাটতে চাইছিল না। এ প্রসঙ্গে ফাইনাল শেষে কোকো বলেন, ‘আমি এ মুহূর্তে কিছুটা বাক্রুদ্ধ। আমার মনে হচ্ছে, সৃষ্টিকর্তা আমাকে কষ্টের ভেতর দিয়ে এটি দিয়েছেন। হয়তো অর্জনটাকে আরো মধুর করার জন্য। আমি কৃতজ্ঞ। এই অনুভূতি ব্যক্ত করার কোনো ভাষা নেই।’
কোকো আরো বলেন, ‘আমি যখন আমার বাবাকে জড়িয়ে ধরলাম। আমি তার মুখ দেখিনি। কারণ, তিনি আমাকে জড়িয়ে ছিলেন। তবে আমি তার কান্নার শব্দ শুনতে পেয়েছি। আমি কখনো মানুষটিকে কাঁদতে দেখিনি। আর আমার মা, আমি জানতাম আমি হারি কিংবা জিতি তিনি কাঁদবেনই। আমি সারাক্ষণই নিজেকে বলছিলাম, হে সৃষ্টিকর্তা এটা কি আসলেই সত্যি?’ এর আগে ১৯৯৯ সালে ১৮ বছর বয়সে সেরেনা উইলিয়ামস ইউএস ওপেনের ফাইনালে মার্টিনা হিঙ্গিসকে হারিয়েছিলেন। শেষ বার টিন এজার হিসেবে সেরেনা জিতেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ওপেন। এ বার সেরেনা ছুঁলেন কোকো। এছাড়া ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জিতে এটিপি ক্রমতালিকায় কোকো ৬ নম্বর থেকে উঠে এসেছেন ৩ নম্বরে।
প্রথম ট্রফি হাতে নিয়ে কোকো বলেন, ‘আমি এখন নিউইয়র্ক সিটিতে রয়েছি। সদ্য কেরিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জিতলাম। যারা আমাকে সমর্থন করেছেন, তাদের সকলকে ধন্যবাদ। যারা যারা ফাইনালটা দেখলেন তাদের সকলেও জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ।’