জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কোবরার মুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে দুই হাজার স্বাক্ষর ব্যাপি সংগ্রহ করেছে শিক্ষার্থীরা।
গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়ে সম্পন্ন হয় আজ সোমবার বেলা ২ টায় শেষ হয়। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মন্তব্য তুলে ধরে খাদিজাতুল কোবরার মুক্তি দাবি জানিয়ে গণস্বাক্ষর করেন।
প্রতিষ্ঠার দুই যুগ পেরিয়ে পঁচিশে হাবিপ্রবি গণস্বাক্ষর কর্মসূচীর অন্যতম সমন্বয়ক ইভান তাহসিব বলেন, নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা বিনা বিচারে কারাগরে আটক। তার নিঃশর্ত মুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে ক্যাম্পাসে স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচী চলছে। ছাত্রদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবে। খাদিজা কোনো অন্যায় করেনি, সে কথাটাই আমরা জানিয়ে দিতে চাই। আমরা এই কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেবো।
গণস্বাক্ষর কর্মসূচি সম্পন্ন করার দায়িত্বে থাকা মারুফ মুনতাসির জানান, বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি আমাদের ইতিহাসে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। আমরা চাচ্ছি খাদিজার বিচার হোক, সে যদি কোনো অপরাধ করে থাকে তা আদালতে প্রমাণ হোক। কিন্তু এভাবে তাকে বিচারহীনভাবে বছর ধরে আটকে রাখা মানবতাবিরোধী একটা কাজ। আমাদের দাবী যৌক্তিক, গণতান্ত্রিক আর মানবিক। খাদিজার আজ এই দুঃসময়ে যদি আমি আমরা আপনারা পাশে না দাঁড়াই তবে নিশ্চিত থাকেন কাল আমার কিংবা আপনার পরিবারের কেউ এই অপসংস্কৃতির হিংস্র থাবার শিকার হবেন। পাশে দাঁড়ানোর কেউ থাকবে না।
আবারও ইবিতে র্যাগিংয়ের অভিযোগ, পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি শেষ দিন স্বাক্ষর করতে আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন বলেন, খাদিজা একজন উপস্থাপিকা হিসেবে তার জায়গা থেকে যে প্রশ্নগুলো করেছে সেগুলোতে সরকার বিরোধী কিছু ছিল না। অনুষ্ঠানের অতিথি সরকারবিরোধী কিছু বলে থাকলে সেটাতো খাদিজার দোষ না। সে শুধু উপস্থাপিকার দায়িত্ব পালন করেছে। খাদিজার দোষ প্রমাণ হওয়ার আগে এক বছর জেলে থাকা কোনভাবেই ন্যায়সংগত নয়। বিচারিক কার্য শুরু এবং দোষ প্রমাণ হওয়ার আগেই এক বছর একজন ছাত্রীকে জেলে থাকতে হয়েছে ব্যাপারটা দুঃখজনক। আমি দ্রুত তার মুক্তি চাই।
উল্লেখ্য, খাদিজাতুল কুবরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২২ সালের অক্টোবরে খাদিজা ও মেজর (অব.) দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। একটি মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম এবং অন্যটির বাদী কলাবাগান থানার এসআই আরিফ হোসেন। উক্ত মামলায় গত এক বছরের বেশি সময় ধরে জেলে আটক আছেন খাদিজা। এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খাদিজাতুল কোবরার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
