সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩, ১৭ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

সুন্দরবনের কটকা অভয়ারণ্যে হঠাৎ শিয়ালের উপদ্রব

হরিণের জন্য বিপজ্জনক

আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:০০

পূর্ব সুন্দরবনের পর্যটনকেন্দ্র কটকা অভয়ারণ্যে শিয়ালের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। শিয়াল প্রতিনিয়ত হরিণ মারছে। শিয়ালের তাড়নায় পর্যটনকেন্দ্রটিতে নির্বিঘ্ন বিচরণ করতে পারছে না হরিণ। শিয়াল দমন করা না গেলে অদূর ভবিষ্যতে শিয়াল হরিণের জন্য শঙ্কার কারণ হতে পারে বলে বন কর্মকর্তারা মনে করেন।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্টার সুরজিত চৌধুরী মোবাইল ফোনে বলেন, গত কিছু দিন ধরে কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রে হঠাৎ শিয়ালের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় শিয়ালের অসহনীয় ডাকাডাকি শুরু হয়ে যায়। শিয়াল প্রতিনিয়ত হরিণ মারে, বিশেষ করে বাচ্চা হরিণ শিয়ালের কামড়ে মারা পড়ছে বেশি। কটকায় আগত পর্যটকরা খুব কাছ থেকে নির্ভয়ে ঘোরাফেরা করা হরিণ দেখে পুলকিত হন, কেউ কেউ কটকা ফরেস্ট অফিস চত্বরসহ আশপাশে গাছের ডাল ভেঙে নিজের হাতে বনের হরিণকে পাতা খাইয়ে থাকেন। শিয়ালের তাড়নায় পর্যটনকেন্দ্র কটকায় নির্বিঘ্ন বিচরণ করতে পারছে না হরিণ। অতীতে সুন্দরবন তথা কটকায় কেউ শিয়াল দেখেনি। এখন কটকায় ২০-২৫টি শিয়াল রয়েছে। এখানে শিয়াল কীভাবে এলো, তা ভাবনার বিষয় বলে ফরেস্টার সুরজিত চৌধুরী জানান।

শরণখোলা রেঞ্জের সাবেক রেঞ্জ কর্মকর্তা (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, তিনি দীর্ঘ চাকরিজীবনে সুন্দরবনে শিয়ালের কোনো অস্তিত্ব পাননি। কটকায় শিয়ালের উপদ্রবের খবর জেনে হতবাক হয়ে তিনি বলেন, শিয়াল হরিণের বংশবিস্তারে হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ (ওয়াইল্ড লাইফ) খুলনার সাবেক বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মদিনুল আহসান বলেন, সুন্দরবনে শিয়াল থাকার কথা নয়। লোকালয়ের কাছে থাকা সুন্দরবনে দুই-একটি শিয়াল থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু কটকাসহ গভীর সুন্দরবনে শিয়াল থাকার খবর তিনি কখনো শোনেননি। বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করা কুমির বিশেষজ্ঞ আদনান আজাদ বলেন, তিনি স্বচক্ষে কটকায় বাঘের মেরে রাখা বড় আকারের হরিণ শিয়ালকে খেতে দেখেছেন।

বন বিভাগ খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো ইত্তেফাককে বলেন, কটকায় শিয়ালের খবর তিনি প্রথম বারের মতো এই প্রতিবেদকের কাছে শুনলেন। স্বাভাবিকভাবে সুন্দরবনের গভীরে শিয়াল থাকার কথা নয়। কটকায় শিয়ালের সংখ্যা বেড়ে গেলে ভবিষ্যতে তা হরিণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে করণীয় নির্ধারণ করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

ইত্তেফাক/এমএএম