বর্ষা এলেই ফরিদপুরের সদরপুর অংশে ভাঙনের চিরচেনা রূপ নেয় পদ্মা নদী। চলতি বর্ষায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ভাঙনের কবলে পড়েছে।
এরই মধ্যে পানি কমতে শুরু করেছে। অন্যদিকে বেড়েছে নদীভাঙন। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আধা কিলোমিটার দূরত্বে থাকা সাবেক অঞ্চল পিঁয়াজখালী বাজার, সরকারি গুচ্ছগ্রামসহ বিভিন্ন স্থাপনা। অপরদিকে, নারিকেলবাড়ীয়া ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর ও নন্দলালপুর, নুরুদ্দিন সরদারকান্দি গ্রামে পদ্মার ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙন কবলিত ক্ষতিগ্রস্তদের বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সাহায্য করা হলেও নেই ভাঙন রোধে কার্যকরী উদ্যোগ। ভুক্তভোগীরা সাহায্যের বদলে চাইছেন কর্তৃপক্ষের নদীভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।
গত সোমবার সরেজমিনে সংবাদ সংগ্রহের সময় এই সংবাদদাতা দেখতে পান, পদ্মার স্রোতে উপজেলার ঢেউখালী ও আকটেরচর ইউনিয়নের শয়তানখালী চরলঞ্চঘাট, ঘাট সংলগ্ন পাকা রাস্তা, মুন্সীরচর, পেঁয়াজখালীর চর, আকোট, আকটেরচর, গুচ্ছগ্রাম, ছলেনামা গ্রাম ভাঙনের কবলে পড়েছে। পদ্মার মূলস্রোত এই অংশ দিয়েই প্রবাহিত হয় ও পানির গভীরতা বেশি থাকায় নদীপাড় ঘেঁষে ভারি ট্রলার, বাল্কহেড, লঞ্চ স্টিমার চলাচল করে। যে কারণে স্রোত ও ঢেউয়ে সৃষ্ট ভাঙনের তীব্রতা অব্যাহত রয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। তবে ভাঙন রোধে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা বা অন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ (পাউবো) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
পিঁয়াজখালীর স্থানীয় বাসিন্দা সুমন বেপারী জানান, ‘চলতি মৌসুমে আমাদের অনেক ফসলি জমি ভেঙে গেছে। পদ্মার এই পাড়ে গভীরতা ও স্রোত বেশি, এই পাড় ঘেঁষেই ট্রলার, লঞ্চ, স্টিমার চলে। এ কারণে পানির স্রোতে ও ঢেউয়ে ভাঙন আরও বেড়েছে। এই ভাঙন অব্যাহত আছে। আমরা সাহায্য চাই না, নদীভাঙন রোধের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
ঢেউখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতি বলেন, প্রায় কোয়ার্টার কিলো নির্মাণাধীন সেমিপাকা রাস্তাসহ শয়তানখালী লঞ্চঘাট ভেঙেছে। সেটি সরিয়ে আনতে হয়েছে। পাশাপাশি মুন্সিরচর, পিঁয়াজখালি গ্রামের প্রায় কয়েকশ’ একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
আকোটেরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসলাম বেপারী জানান, ইউনিয়নের আকটেরচর, গুচ্ছগ্রাম, ছলেনামা গ্রামে ভাঙন অব্যাহত আছে। ১৭টি ঘরবাড়ি ও প্রায় ২০০ একর ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। আমরা নদীভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান প্রত্যাশা করি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, আমরা নদীভাঙন সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। ভাঙন কবলিতদের তালিকা করে এরই মধ্যে ১৯৮ পরিবারকে ১ বান্ডেল ঢেউটিন ও নগদ তিন হাজার টাকা করে সাহায্য দিয়েছি। আগামীতে আরও সাহায্য চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছি।