রোববার, ০১ অক্টোবর ২০২৩, ১৬ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

এডিসি হারুন কাণ্ড

‘ছাত্রলীগ চাইলে শাহবাগ থানা এতক্ষণ আস্ত থাকত না’

আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১১

রাজধানীর শাহবাগ থানায় নিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ২ নেতাকে মারধরের ঘটনায় এখনো নানা বিশ্লেষণ চলছে। এরই অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপপ্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকনও মন্তব্য করেছিলেন ঘটনাটিকে ঘিরে। তিনি বলেছেন, ছাত্রলীগ মারামারি করতে চাইলে শাহবাগ থানা এতক্ষণ আস্ত থাকত না।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ কথা বলেন খোকন।

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপপ্রেস সচিব স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘সমাজের কিছু মানুষ, সবকিছুতেই মাঝপথ দিয়ে চলেন। জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার ভয়ে, সত্য’কে সত্য বলেন না, মিথ্যা’কে মিথ্যা বলেন না। নিজের ছাড়া, ওনারা জাতির কি উপকারে আসেন জানি না।’

‘যাহা সত্য-তাহা সত্য, যাহা মিথ্যা-তাহা মিথ্যা। সত্য-মিথ্যার মাঝখানে কিছু নেই। কিন্তু, নিরপেক্ষ ভাব নেওয়ার জন্য, এর মধ্যে তারা একটা ধূসর লাইন খুঁজে বেড়ান, দুইপক্ষকেই খুশি করার জন্য। যদিও, এটা কোনো টেকসই পদ্ধতি না।’

তিনি লিখেন, ‘পরকীয়া প্রেমের জের ধরে তিনজন জলজ্যান্ত মানুষকে থানায় ধরে নিয়ে কুকুরের মতো পিটাল, দুজনের ভবিষ্যৎ জীবন অন্ধকার করে দিল, এরপরও তারা বলেন, আসলে কে দোষী তা এখনই নয়, তদন্তের পর বলা যাবে। সত্যিই সেলুকাস, কী বিচিত্র আপনারা!’

‘মানলাম, নিষিদ্ধ পুরুষ এডিসি হারুনকে নিজের স্ত্রীর পাশে দেখে আজিজ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, এর প্রতিশোধ কি দুজন তরুণের জীবন পঙ্গু করে দেওয়া? ভবিষ্যৎ জীবন দুর্বিষহ করে তোলা?’

‘আগে হট্টগোল যদি আগে হয়েও থাকে, সেটা থানার বাইরে। ইসিজি-ইটিটি রুমের পর্দার ভেতরে, (ভিডিওতে দেখলাম) সিভিল পোশাকে, এডিসি হারুনকে পেয়ে যদি গায়ে কেউ হাত দিয়ে থাকে, এটার জন্য তিনি মামলা করতে পারতেন। কোনো নাগরিককে ধরে এনে থানায় পেটানোর অধিকার দেশের আইনের কোথাও নেই। এডিসি হারুন যে মার খেয়েছে, তাকে দেখে একবারও কি তা মনে হয়েছে? ছাত্রলীগ মারামারি করতে চাইলে তো এতক্ষণে শাহবাগ থানা ওখানে আস্ত থাকত না, তারা তিনজন যেতেন না, চার/পাঁচশ ছাত্র নিয়ে যেতেন।’

‘এক শেয়ালের লেজ কাটা গেছে, এখন সবার লেজ কাটতে হবে। মিডিয়াকে ব্যবহার করে একটি গোষ্ঠী সেই অপচেষ্টাই করে যাচ্ছে। কে প্রথমে হট্টগোল তৈরি করেছে, এটা প্রতিষ্ঠিত করে যারা শাহবাগ থানার পৈশাচিক ঘটনাকে জায়েজ করতে চাচ্ছেন, তারা এডিসি হারুনের মতোই অপরাধী।’ ‘আরেকটি কথা, তদন্ত কমিটিতে যারা সদস্য তারা শুধুই পুলিশ ক্যাডারের, কমিটিতে অ্যাডমিন ক্যাডার এবং ছাত্রলীগকেও রাখা উচিত। কারণ, ঘটনার সঙ্গে তিনটা পক্ষ জড়িত। নয়তো রিপোর্ট একতরফাই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’

 

এর আগে তিনি পুলিশ কর্মকর্তা সানজিদার সাক্ষাৎকার নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি বলেন, চ্যানেল আইতে পুলিশ কর্মকর্তা সানজিদার সাক্ষাৎকার দেখার পর কিছু প্রশ্ন মনে আসল- ‘আপনি অসুস্থ, আপনার হাজব্যান্ড জানে না, আপনার আরেক বিভাগের স্যার কীভাবে জানে? যদি আপনি জানিয়ে থাকেন, তাহলে অ্যাপয়েন্টম্যান্টের জন্য আপনি তো আপনার হাজব্যান্ডকে বলতে পারতেন। কারণ আপনার হাজব্যান্ডের পদ-পদবি আরও বড়।

এডিসি হারুন

স্বামীর চেয়ে স্যার যখন বেশি আপন হয়, তখন বিষয়টা অস্বাভাবিক না? আপনার নিজের বড় বোনও ঢাকা মেডিকেলের ডাক্তার, যেহেতু উল্টাপাল্টা পোশাকের বিষয় আপনিই বলেছেন, ইসিজি ইটিটি তো আপনি ওনার ওখানেও করতে পারতেন।

এ ছাড়া, পুলিশ হাসপাতাল হচ্ছে দেশের অন্যতম ভালো একটা হাসপাতাল, আপনি তো সেখানেও যেতে পারতেন। এই এডিসি হারুনকে এক সপ্তাহ আগেও আপনার হাজব্যান্ড অনুরোধ করেছিল তার সংসার না ভাঙার জন্য। এরপরও কেন তাকেই আপনার সাথে নিতে হলো। আর আপনার হাজব্যান্ড কেন তাকে অনুরোধ করেছিল?

আপনি যে বারডেমে এটা আপনার হাজব্যান্ড কীভাবে জানল? ওনাকেও কি আপনিই জানিয়েছিলেন? মানে তাদের দুজনকেই আপনি জানিয়েছেন? সংসার বাঁচাতে চাওয়া কি একটি বেচারা স্বামীর জন্য অপরাধ?

ইত্তেফাক/এনএ