সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩, ১৭ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্টের অন্যতম পথিকৃৎ 'অস্টেম ইমপ্ল্যান্ট' এর সেবা পাচ্ছেন বাংলাদেশে

আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:৫৬

বার্ধক্য, দুর্ঘটনা, ক্ষয় ইত্যাদি কারণে দাঁত পড়ে যেতে পারে বা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দাঁত পড়ে গেলে প্রতিস্থাপন করা হয়। এ ক্ষেত্রে ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্ট বর্তমানে খুব সফল একটি পদ্ধতি। ক্ষতিগ্রস্ত দাঁতের পাশের দাঁতগুলোকে ক্ষত করা ছাড়াই যেখান থেকে দাঁত পড়ে গেছে সে জায়গায় কৃত্রিম একটি দাঁতকে প্রতিস্থাপন করা হয়। বর্তমানে সারা বিশ্বে ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্ট একটি আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। আর এই চিকিৎসা পদ্ধতি আপনার হাতের নাগালে এনেছে 'অস্টেম ইমপ্ল্যান্ট'।

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে, ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্ট সার্জারিতে বেশ জনপ্রিয় কোরিয়ার শীর্ষস্থানীয় এই ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্ট কোম্পানিটি। তাদের উন্নত ইমপ্ল্যান্ট প্রযুক্তি অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে। 'অস্টেম ইমপ্ল্যান্ট' শুধু ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্টের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামই তৈরি করেনা বর্তমানে তারা ডেন্টাল ক্লিনিকগুলোতে প্রয়োজন অনুযায়ী আইটি পরিষেবাও দিয়ে আসছে।

সাধারণত ৬ ধরণের পরিষেবা দিয়ে থাকে 'অস্টেম ইমপ্ল্যান্ট'। সেগুলো হচ্ছে: দাঁত প্রতিস্থাপন; ডেন্টাল ইকুইপমেন্ট এবং ফার্মাসিউটিক্যাল; ডেন্টাল আইটি প্রযুক্তি; ডেন্টাল ক্লিনিক ইন্টেরিয়র ডিজাইন; দাঁত প্রতিস্থাপন বিষয়ক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ এবং ডেন্টাল ক্লিনিকাল ব্রডকাস্টিং ও ওয়েব পোর্টাল পরিষেবা।

বিশ্বব্যাপী ডেন্টাল খ্যাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে 'অস্টেম ইমপ্ল্যান্ট'। উন্নত প্রযুক্তি এবং তাদের পণ্যের গুণগতমান বজায় রেখে বিশ্বে ৯০ টিরও বেশি দেশে সরবরাহ করছে তাদের সরঞ্জাম ও পরিষেবা। ইমপ্ল্যান্টটি তৈরি করতে টাইটানিয়াম ধাতু ব্যবহার করা হয়েছে। যা পণ্যের মান ও স্থায়িত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

২০২২ সালের তথ্য অনুসারে, বিশ্বব্যাপী ডেন্টাল ইমপ্লান্ট মার্কেট শেয়ারের ১০ শতাংশ ছিল অস্টেম ইমপ্ল্যান্টের। সে হিসেবে ডেন্টাল সেক্টরে বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ কোম্পানি এটি। এটি বাংলাদেশের প্রথম ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্ট কোম্পানি। ২০১১ সাল থেকে গৌরবের সাথে বাংলাদেশে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে 'অস্টেম ইমপ্ল্যান্ট'। বাংলাদেশে শুধু সরঞ্জাম ও পরিষেবা সরবরাহ করেই থেমে থাকেনি প্রতিষ্ঠানটি। দীর্ঘ এক যুগের পথচলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার জনেরও বেশি ডেন্টাল সার্জনকে ইমপ্ল্যান্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সময়ের সাথে সাথে বাংলাদেশে বেড়েছে ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্টের চাহিদা। বিশেষ করে দেশের বাইরে থাকা বাংলাদেশিরা দেশে এসে ইমপ্ল্যান্ট চিকিৎসা করিয়ে আবার চলে যান। এর প্রধান কারণ বাংলাদেশে চিকিৎসার তুলনামূলক কম খরচ।

ডিজিটাল ডেন্টিস্ট্রি নিয়ে বাংলাদেশে কাজ করছে 'অস্টেম ইমপ্ল্যান্ট'। বাংলাদেশে ডিজিটাল ডেন্টিস্ট্রির উপযোগী শিল্প পরিবেশ গড়ে তুলতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে তারা। ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্ট নিরাপদ, এবং টেকসই করতে প্রয়োজন ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্ট সার্জারি। আর এই সার্জারি নিখুঁত ভাবে করতে আধুনিক প্রযুক্তিগত সেবা দিয়া যাচ্ছে 'অস্টেম ইমপ্ল্যান্ট'। এছাড়াও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন প্রযুক্তির আনার পাশাপাশি নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে আর অ্যান্ড ডি উদ্ভাবন চালিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ 'অস্টেম ইমপ্ল্যান্ট'।

ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্ট কি

অনেকেরই বিভিন্ন কারণে ডেন্টাল ক্যারিজ হয়ে দাঁত এমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে, তখন চাইলেও আর ওই দাঁত রক্ষা করা সম্ভব হয় না। তখন এক্ষেত্রে হারানো দাঁত প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। অনেকের মধ্যে এক্ষেত্রেও চরম অবহেলা দেখা যায়। একটা দাঁত না থাকলে অনেকেই সেটির প্রতি গুরুত্ব দেন না। এসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি হলো ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্ট। ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্ট শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ইমপ্ল্যান্টের মতোই অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্ট পদ্ধতিতে পাশের দাঁতগুলোকে সাপোর্ট বা অ্যাবাটমেন্ট হিসেবে নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এখানে ফাঁকা জায়গায় চোয়ালের হাড়ের মধ্যে কৃত্রিম শিকড় হিসেবে টাইটানিয়ামের তৈরি ইমপ্ল্যান্ট বসিয়ে আসল দাঁতের মতোই হুবহু সব কাজ করা যায় এবং দেখতে অবিকল আসল দাঁতের মতোই তৈরি করে দেওয়া যায়। উন্নত দেশগুলোতে বেশ অনেক বছর ধরেই দাঁতের প্রতিস্থাপন পদ্ধতিতে ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্ট পদ্ধতি জনপ্রিয়।

ডেন্টাল ইমপ্লান্ট সুবিধা

ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্টের অনেক সুবিধা রয়েছে। ইমপ্ল্যান্টের সুবিধাগুলো- ১/ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্ট পদ্ধতি হুবহু আসল দাঁতের মতো দেখতে এবং ব্যবহার পদ্ধতিও একই। ২/ইমপ্ল্যান্ট পদ্ধতিতে অন্য দাঁতগুলোকে সাপোর্টের প্রয়োজন পড়ে না, তাই অন্য দাঁতগুলোর কোন ধরনের ক্ষতি ছাড়া হারানো দাঁত প্রতিস্থাপন করা যায়, যা ব্রিজ পদ্ধতিতে করা যায় না। ৩/ইমপ্ল্যান্ট একটি স্থায়ী পদ্ধতি। তাই বারবার পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন পড়ে না। সাধারণত সারা জীবনই ব্যবহার করা যায়। ৪/অনেকেই ডেনচার ব্যবহার করলে পরিষ্কারভাবে কথা বলতে পারেন না, খাওয়া দাওয়ার সময়ে অসুবিধা হয়, যা ইমপ্ল্যান্টে হয় না। এ পদ্ধতিতে পাশের দাঁতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।

কারা ইমপ্ল্যান্ট করতে পারবেন

একজন সুস্থ, স্বাভাবিক মানুষের হারানো দাঁত প্রতিস্থাপনের জন্য ইমপ্ল্যান্ট করাতে পারবেন। তবে যারা মুখ ও দাঁত পরিষ্কার রাখতে পারেন না, ওরাল হাইজিন যাদের ভালো নয়, যাদের ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকে বেশির ভাগ সময়েই, যারা হার্টের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন, যারা চেইন স্মোকার, রক্ত তরলকারক ওষুধ যারা সেবন করেন, তাদের জন্য ইমপ্ল্যান্ট না করাই শ্রেয়। তবে ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্ট করানোর ক্ষেত্রে ডেন্টাল ইমপ্ল্যান্টের ওপর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ডেন্টাল সার্জন বেছে নেওয়া উচিৎ।

ইত্তেফাক/এএইচপি