ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল থেকে পড়ে এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন। তবে কত তলা থেকে এবং কীভাবে পড়েছে সেটি জানা যায়নি। প্রাথমিকভাবে তার টেবিলে রাখা নোট দেখে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম কাজী ফিরোজ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইনিজ ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। থাকতেন মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ২০৩ নম্বর রুমে। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) আনুমানিক রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে এই শিক্ষার্থী একাত্তর হলের যমুনা ব্লক থেকে পড়ে যান। এরপর রাত দেড়টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ পুলিশ পাড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাচ্চু মিয়া বলেন, জিয়া হলের একজন ছেলেকে হসপিটালে নিয়ে আসা হয়েছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়াহিদুল আলম বলেন, 'আনুমানিক ১২টা ৫০-৫৫ মিনিটে বিজয় একাত্তর হল মাঠে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলাম। এ সময় আমার চোখটা যমুনা ব্লকের দিকে ফোকাস ছিল। এ সময় আমি ‘আল্লাহরে’ বলে একটা চিৎকার শুনতে পাই। এরপর সেই ব্লকের লিফটের দিকে তাকালে দেখি, উড়ন্ত লুঙ্গির মতো কিছু একটা নিচে পড়ে যাচ্ছে। এরপর বিকট একটা শব্দ হয়। বুঝলাম কেউ হয়ত লাফ দিয়েছে বা পড়ে গেছে। তৎক্ষণাত আমি সেখানে দৌঁড়ে যাই এবং পাশের রিডিং রুম থেকে আরও কয়েকজন ভাই দৌড়ে ঘটনাস্থলে আসে। গিয়ে দেখি, ওনার শরীর ঘর্মাক্ত। সেন্সলেস হয়ে পড়ে আছেন। এরপর এক ভাই ওনার মুখে পানি দিয়ে বুকে পাঞ্চ করলে উনি নিশ্বাস নেওয়া শুরু করেন। পরে ওনাকে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওনার পরনে একটা লুঙ্গি এবং গলায় একটা গামছা ছিল।'
বিজয় একাত্তর হলের শেখ রাব্বীসহ আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী কাজী ফিরোজকে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেই শেখ রাব্বী বলেন, 'আমি রুমে শুয়ে ছিলাম। শোরগোল শুনে বের হয়ে দেখি, এক ছেলে নিচে পড়ে আছে। দৌড়ে নেমে এসে দেখি, তার সেন্স নেই। এরপর তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য রিকশায় তুলে দেই। যখন তাকে আমি ধরেছি, তার শরীরটা একদম তুলতুলে ছিল। মনে হচ্ছে, সব হাঁড় ভেঙে গেছে। তবে তার কোনো ব্লিডিং হয়নি। আর সেসময় আমি তার বুকে হাত দিয়ে দেখেছিলাম পালস ছিল।'