বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

সাইলেন্ট মেজরিটিকে ঐক্যবদ্ধ করাই গণমুক্তি জোটের লক্ষ্য: শাহরিয়ার

আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২২:১৮

গণমুক্তি জোটের চেয়ারম্যান ড. শাহরিয়ার ইফতেকার ফুয়াদ বলেছেন, গণমুক্তিজোট একটি নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক জোট। গণমুক্তিজোটের মার্কা হল ছড়ি। নির্বাচনের মাঠ ২০১৪ এর মত ফাঁকা রাখতে চায় না এই জোটের নেতারা। নির্বাচনে গোল পোস্ট ফাঁকা থাকলে সরকারি দলের গোল দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ক্ষমতায় থাকা দুটো রাজনৈতিক দলই ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের অঙ্গীকার- আইনের শাসন, সুশাসন, ন্যায় বিচার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা ভুলেই গেছে তাদের দুই দলের নেতা-কর্মীর বাইরেও একটি বৃহৎ মধ্যবিত্ত, সৃজনশীল, কর্মঠ, শান্তিপ্রিয়, জনগোষ্ঠী রয়েছে, যারা হানাহানি, মারামারি দেখতে চায় না। তারা সংঘর্ষের ভয়ে ভীত হয়ে নিশ্চুপ হয়ে দিশেহারা হয়ে গেছে। গণমুক্তি জোট সেই সাইলেন্ট মেজরিটিকে ঐক্যবদ্ধ করতেই মাঠে নেমেছে।  

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব ভিআইপি লাউঞ্জে ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে বর্তমান প্রেক্ষাপটে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

সভাপতির বক্তব্যে ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নতুন করে সংঘাতের রাজনীতির উদ্ভব হয়েছে। বাংলাদেশের বৃহৎ দুই রাজনৈতিক দল তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। সরকারি দল যেকোনো মূল্যে নির্বাচন করতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। অপরদিকে প্রধান বিরোধীদল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে আসবেনা বলে গোঁ ধরেছে। এমন পরিস্থিতিতে কেউ যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তবে তাদের সরকারের ‘বি’ টিম হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। 

অপরদিকে কোনো রাজনৈতিক দল যদি তত্ত্বাবধায় সরকারের দাবিতে নির্বাচন বয়কট করে তাহলে তারা বিরোধী দলের পারপাস সার্ভ করছে বলে তকমা লাগানো হচ্ছে। ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের পর একটি রাজনৈতিক ঐক্যমতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অথচ দেখা গেল ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে তৎকালীন বিএনপি সরকার তত্ত্বাবধায় সরকার বাদ দিয়ে নির্বাচন করে ফেলে। পরবর্তীতে দেখা যায় আওয়ামী লীগের আন্দোলনের মুখে তারা ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়। তত্ত্বাবধায় সরকারের বাই প্রোডাক্ট হিসেবে আমরা ওয়ান ইলেভেনের মতো নিষ্ঠুর সরকারের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। পৃথিবীর কোনো উন্নত দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই, এটাই সত্য। বিচার বিভাগও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা নেই বলে রায় দিয়েছে। 

গণমুক্তির সভাপতি আরও বলেন, রাজনৈতিক সমাধান বিচার বিভাগকে দিয়ে করানো কতটুকু যুক্তিসঙ্গত সেটাও আলোচনার দাবি রাখে। তবে ২০১৪ এবং ২০১৮ এর নির্বাচন মানুষের মনে সংকটের বীজ বপন করেছে। বিরোধী দলও বিশ্বাস করে না যে সরকারি দলের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করানো সম্ভব।  

গণমুক্তি জোটের প্রধান সমন্বয়ক আবু লায়েস মুন্নার সঞ্চালনায় সভার শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জোটের কো চেয়ারম্যান প্রফেসর ডক্টর এ. আর. খান। সভার মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন গণমুক্তি জোটের প্রধান মুখপাত্র বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব কাসেম মাসুদ।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গণমুক্তি জোটের প্রধান উপদেষ্টা ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের সাবেক ছাত্রনেতা মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিস, উপদেষ্টা ড. মোমেনা ড. ঈসা মহম্মদ, সাংবাদিক রেহানা সালাম, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও নৈতিক সমাজের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন, হিন্দু মহাজোটের চেয়ারম্যান গোবিন্দ প্রামাণিক, গণমুক্তি জোটের কো চেয়ারম্যান ড. সারোয়ার, আক্তার হোসেন, আলামিন রাজু, সমন্বয়ক মরিয়ম আমিনা, রশিদ মিয়া, মনি মোহন বিশ্বাসসহ অনেকে।

ইত্তেফাক/পিও