বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ইয়া নবী সালাম আলাইকা

আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:১৩

ইয়া নবী সালাম আলাইকা, ইয়া রসুল সালাম আলাইকা, ইয়া হাবিব সালাম আলাইকা, সালাওয়া তুল্লা আলাইকা। লক্ষ-কোটি সালাম প্রেরণ করি রহমাতুল্লিল আলামিন হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা (স.) ও তার পরিবারবর্গের ওপর। রাত্রি বিদায়ের সময়ে, ধু ধু মরুতে সূর্য যখন জেগে ওঠেনি, সেই ভোরের বাতাসে, আঁধার ঝোপে, রূপের নুরানি চেহারায় সুবহে সাদিকের সময় মক্কার বিখ্যাত কুরাইশ বংশে মা আমিনার ঘর আলোকিত করে শুভ আগমন করেন রসুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। অধিকাংশ ইসলামি স্কলারদের মতে, সময়টি ছিল ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল। রহমতের নবীর আগমনে আকাশ ও বাতাসে ধ্বনিত হলো আহলান সাহলান, মারহাবান।

প্রিয়নবী (স.) সারা জাহানের জন্য রহমত স্বরূপ। আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী আমি আপনাকে রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি।’ সুরা আম্বিয়া :১০৭। রসুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিতা হজরত আবদুল্লাহ নবীজির (স.)  জন্মের পূর্বে ইন্তেকাল করেন। মাতা হজরত আমিনা, দাদা আবদুল মুত্তালিব, নানা আব্দুল ওহাব। জন্মের পর আবদুল মুত্তালিব নাম রাখেন ‘মুহাম্মদ’। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণ শিশুদের মতো ছিলেন না। এক অপরূপ নুরের অধিকারী ছিলেন। নবীজির মা হজরত আমেনা বলেন, ‘তার আগমনের পর মুহূর্তে একটা নূর প্রকাশিত হলো। সেই আলোতে পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের সবকিছু আলোকিত হয়ে যায় এবং এই আলোতে সিরিয়ার শাহি মহল আমি দেখতে পাই—বায়হাকি ও দালায়েলুন নবুয়ত।

নবীজির আগমনের সাথে সাথেই আল্লাহর পবিত্র ঘর কাবা বা শরিফ মাকামে ইব্রাহিমের দিকে ঝুঁকে পড়েছিল। এই দৃশ্য দাদা আব্দুল মুত্তালিব দেখতে পেয়েছিলেন। দেখুন, মাদারেজুন নবুয়াত গ্রন্থে। নবীজি খুব সম্মানিত হওয়ায় খতনা অবস্থায় আগমন করেছেন। হজরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম বলেছেন, আমি আমার রবের নিকট থেকে সম্মানিত যে, আমি খাতনা অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হয়েছি। আমার লজ্জাস্থান কেউ দেখেনি (তাবারানি আওসাত)। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা রাখার মাধ্যমে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি পালন করেছেন, যা হাদিসের বর্ণনায় পাওয়া যায়। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সোমবার রোজা রাখা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি উত্তরে বলেন, এ দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনে আমার প্রতি নবুয়াত অবতীর্ণ হয়েছে।’ মুসলিম শরিফ।

এই পৃথিবীতে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমন উপলক্ষ্যে আল্লাহর শুকরিয়ার্থে শরিয়তসম্মতভাবে খুশি উদ্যাপন করি। তার ওপর দরুদ ও সালাম প্রেরণ করি। আমরা শ্রেষ্ঠ নিয়ামত ও আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ এক রহমত পেয়েছি। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘হে মানবকুল! তোমাদের কাছে উপদেশ বাণী এসেছে, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের ব্যাধির নিরাময়, হিদায়েত ও রহমাত মুসলমানদের জন্য। হে রসুল আপনি বলুন, আল্লাহ’র অনুগ্রহ এবং তার দয়ায় সুতরাং এতে তাদের আনন্দিত হওয়া উচিত। এটিই উত্তম সে সমুদয় থেকে যা তারা সঞ্চয় করেছে। সুরা ইউনুস, আয়াত : ৫৭-৫৮।

লেখক: শিক্ষক, খতিব ও ইসলামি গবেষক

ইত্তেফাক/এসকে

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন