কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের বাংগড্ডা ইউনিয়নের দাড়াচৌ গ্রামে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মুঘল শাসনামলে নির্মিত তিন গম্বুজের ফকির বাল্লেগ শাহ্ মসজিদ। সংষ্কারের অভাবে অন্তত ৫০০ বছর পুরনো মসজিদটি প্রায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে মসজিদটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় এটিতে নামাজ আদায় করা হয় না।
ইতিহাসের বয়ানে জানা যায়, সূদুর ইরাকের বাগদাদ থেকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য হযরত শাহ্জালালের (রা.) সঙ্গে ৩৬০ ওলির অন্যতম ছিলেন ফকির বাল্লেগ শাহ্ খন্দকার। ইসলাম প্রচারের জন্য পাহাড়, নদী, জঙ্গল বেষ্টিত গ্রাম দাড়াঁচৌতে অবস্থান করে নামাজ আদায়ের জন্য চুন, সুরকি দিয়ে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদ নির্মাণ করেন তিনি। এটি নির্মাণের সময় মসজিদের পাশে কোনো বসতি ছিল না। পরে ধীরে ধীরে পুরো এলাকায় মানুষের বসবাস শুরু হয়। মসজিদের দেয়ালের একপাশে লেখা রয়েছে ‘পঞ্চদশ’ শতাব্দীর দিকে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। প্রতিনিয়ত দূরদূরান্ত থেকে অনেকে দেখতে আসেন এখানে। আবার অনেকে ইবাদাত করতেও মসজিদটিতে। শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ নারী-পুরুষ এখানে সমবেত হন।
স্থানীয়রা জানান, তাদের বাপ-দাদার কছে শুনেছেন, বহু বছর আগে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। এটি এখন ব্যবহারের অনূপযোগী ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পুরনো মসজিদে নামাজ আদায় করা হয় না। তাই পাশে নির্মাণ করা হয়েছে আরেকটি মসজিদ। তারা কারুকাজ খচিত মসজিদটি সংস্কারের দাবি জানান।
মসজিদ কমিটির সভাপতি শামীম খন্দকার বলেন, পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে শুনেছি অনুমানিক ৫০০ বছর আগে বাল্লেগ শাহ্ ফকির আল বাগদাদি ইরাক থেকে ধর্ম প্রচারের জন্য এখানে এসে নামাজ আদায় করতে ইট-সুরকি দিয়ে কারুকাজ খচিত তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি নির্মাণ করেন। এসময় মসজিদটি সংস্কার করে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষণের দাবি জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান মেহেবুব বলেন, মসজিদটি পরিদর্শন করে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।