টাঙ্গাইলের সখীপুরের সেই ওসিকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। উপজেলা মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় প্রত্যাহারের দাবি জানানোর একদিন পরই থানার ওসি রেজাউল করিমকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তাকে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। নতুন ওসি হিসেবে জেলার কাগমারী পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক (ইনচার্জ) শেখ শাহিনুর রহমানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার স্বাক্ষরিত একপত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার ‘সখীপুরে আইন-শৃঙ্খলা সভায় ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি’ শিরোনামে দৈনিক ইত্তেফাকের অনলাইন সংস্করণে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা সভাকক্ষে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি ওঠে। ওই সভায় ওসি উপস্থিতও ছিলেন না। সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী ফারজানা আলম সভাপতিত্ব করেন। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার কামাল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঞ্জুরুল মোর্শেদ, প্রেস ক্লাবের সভাপতি শাকিল আনোয়ার, ওসি (তদন্ত) সালাউদ্দিন, বণিক সদস্য, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরকার মোহাম্মদ নূরে আলম মুক্তা বলেন, সখীপুর উপজেলার পরিবেশ আগে অনেক ভালো ছিল, স্বাভাবিক ছিল। বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই খারাপ। সখীপুরের আইন-শৃঙ্খলা দিন দিন চরম অবনতি হচ্ছে। তাই তিনি ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি জানান। পরে তার বক্তব্যের সঙ্গে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং কমিটির সদস্যরা একমত পোষণ করেন।
এর আগে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকা-সখীপুর সড়কের প্রতিমাবংকীতে স্থানীয়দের আয়োজনে মানববন্ধনে ওসিকে প্রত্যাহার দাবি করেন এলাকাবাসী। মানববন্ধনে এলাকাবাসী ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ প্রায় চার শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন। বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডেল প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী।
সখীপুর উপজেলায় গত কয়েক মাস ধরে অব্যাহত চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি, অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি, গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটছে। এত কিছুর পরও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নীরব ভূমিকা পালন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কিছু ঘটনার মামলাও ওসি নেয়নি বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ওসিকে প্রত্যাহারের দাবির সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলামও সহমত পোষণ করেন।