প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে রাজধানীতে ধর্মীয় র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী হযরত শাহ্সূফী ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী আল-হাসানীর (মা.জি.আ.) নেতৃত্বে এই র্যালি বের হয়।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। পরে শাহবাগ, মৎস ভবন, দোয়েল চত্বর হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তি মহাসমাবেশে মিলিত হয়।
ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন বিভাগ, জেলা ও উপজেলা থেকে হাজার হাজার জনতা শোভাযাত্রা ও শান্তি মহাসমাবেশে অংশ নিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত হন। শোভাযাত্রার অগ্রভাগে দৃষ্টিনন্দন বড় বড় হরফে লেখা ছিল ‘ইয়া নবী ছালামু আলাইকা’, ‘ইয়া রাসূল ছালামু আলাইকা’।
বিএসপি ও আঞ্জুমান রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার ব্যবস্থাপনায় জশনে জুলুসে অংশগ্রহণকারীরা কলেমা খচিত পতাকা, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ছাড়াও দেশের বিশাল জাতীয় পতাকা বহন করে। জুলুসে অংশগ্রহণকারীরা ‘নারায়ে তকবির’, ‘নারায়ে রেসালত’র স্লোগানে রাজধানীর রাজপথ মুখরিত করে তোলেন।
জুলুস শেষে শান্তি মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন লিবারেল ইসলামিক জোটের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী। এ সময় তিনি বলেন, মহানবীর (সা.) দুনিয়ায় শুভাগমন জগৎবাসীর জন্য আল্লাহ পাকের বিশেষ রহমত ও অনুগ্রহ। তিনি আইয়্যামে জাহেলিয়াতের অবসান ঘটিয়ে পৃথিবীবাসীকে শান্তি, সাম্য ও মুক্তির পথ দেখান। রাসূলে পাক (সা.) দুনিয়ায় শুভাগমনের মূল উদ্দেশ্যই হলো একটি শান্তি ও সহাবস্থানপূর্ণ মানবিক বিশ্বসমাজ গড়ে তোলা।
তিনি আরও বলেন, ধর্ম মানুষকে সুশৃংখলিত করে। উগ্রতা, হঠকারিতা, জঙ্গি কর্মকাণ্ড জ্বালাও-পোড়াওয়ের মাধ্যমে জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি করা ধর্মের বিধান নয়। শান্তি, সাম্য, ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করাই ইসলাম তথা প্রিয় নবীর (সা.) মূল আদর্শ। রাসূলের (সা.) আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়ার কারণেই আজ সিরিয়া, ফিলিস্তিন, মিয়ানমারসহ তাবৎ দুনিয়ায় যুদ্ধ সংঘাত ও রক্তপাতে জর্জরিত। শক্তিধর দেশগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না করে অস্ত্রের ভাষায় কথা বলছে। নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে সমগ্র পৃথিবীর মানুষ খাদ্য, জ্বালানি, মৌলিক অধিকার সংকটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। এই দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে মহানবীর (সা.) আদর্শ অনুসরণের বিকল্প নেই। নবী (সা.) ছিলেন পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক। সাড়ে চৌদ্দশ' বছর আগে রাসূলই আমাদেরকে দেখিয়েছেন কীভাবে সমতাভিত্তিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক আধুনিক কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠন করা যায়।
পীরজাদা মুফতী মাওলানা বাকী বিল্লাহ আল-আযহারী ও শায়খ আজমাঈন আসরারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি ও আলোচক ছিলেন ১৪ দলীয় সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, লিবারেল ইসলামিক জোটের নির্বাহী চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ জনদলের (বিজেডি) চেয়ারম্যান ও লিবারেল ইসলামিক জোটের কো-চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক ও মইনীয়া যুব ফোরাম সভাপতি শাহজাদা সৈয়দ মেহবুব-এ-মইনুদ্দীন প্রমুখ।