স্বপ্না আক্তার নামে এক নারীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে উল্টো ফেঁসে যাচ্ছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা। ওই নারীকে হয়রানির অভিযোগে গুলশান সার্কেলের উপ-পরিদর্শক শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৯ অক্টোবর) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর উত্তরের প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, রোববার আদালত এ আদেশ দিয়ে স্বপ্না আক্তারকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে মামলা করে আদালতকে অবগত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিদর্শক রোকেয়া আক্তার, সহকারী উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান ও রুবেল হোসেন, সিপাহী শরিফুল ইসলামসহ তিনজন পুলিশ ফোর্সের সমন্বয়ে গঠিত রেইডিং টিমের সহযোগিতায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্বপ্না আক্তারের খিলক্ষেতের বাসায় তল্লাশি চালায়। মামলার বাদী রোকেয়া আক্তারেরর মাধ্যমে দেহ ও শয়ন কক্ষ তল্লাশি করে ১ হাজার পিচ ইয়াবা উদ্ধার করে জব্দ তালিকা প্রস্তুত করেন ও সাক্ষীদের স্বাক্ষর গ্রহণ করেন। এরপর মামলার দায়িত্ব পড়ে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আহসানুর রহমানেরর ওপর। তিনি সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। সাক্ষীরা জবানবন্দিতে ঘটনার কিছুই জানেন না বলে লিখিতভাবে জানায়। তাই তদন্ত কর্মকর্তা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আহসানুর রহমান স্বপ্না আক্তারকে অব্যাহতির সুপারিশ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।
এদিকে সার্বিক বিবেচনায় আদালত জানান, ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে ৫ জন অধিদপ্তরের স্টাফ ও দুই জন পুলিশ ফোর্স নিয়ে অভিযান পরিচালিত হয়নি। কথিত ঘটনাস্থল ভুল, উপ-পরিদর্শক রোকেয়া আক্তারের মাধ্যমে মহিলা আসামি স্বপ্না আক্তারের দেহ ও তার কক্ষও তল্লাশি হয়নি। এমন কি টিমে কোনো মহিলা সদস্য ছিল না। ওই সময়ে স্বপ্না পার্শ্ববর্তী বাসায় টিউশনি করাচ্ছিলেন। উল্লিখিত ফোর্স, জব্দ তালিকার সাক্ষী বা প্রত্যক্ষদর্শী অন্য কোনো সাক্ষীর উপস্থিতিতে আসামির দেহ থেকে বা ওয়ারড্রপের ভেতর থেকে কোনো ইয়াবা উদ্ধার হয় নাই। কথিত জব্দ তালিকার সাক্ষীদের সামনে ইয়াবা গোনা বা ওজন করা হয়নি এবং ঘটনাস্থলে সম্পূর্ণরূপে জব্দ তালিকা প্রস্তুত করা হয়নি। তাই আসামি স্বপ্না আক্তারের কাছ থেকে কোনো ইয়াবা উদ্ধার হয়নি ও স্বপ্না আক্তার ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়।
উল্লেখ্য, প্রদত্ত চূড়ান্ত রিপোর্ট গ্রহণ করা হলো এবং আসামিকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।