শরৎকাল ও সাদা কাশফুল
শরৎ এসেছে!
চারিদিকে কত রকম ফুল ফুঁটেছে।
আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর নিচে সাদা কাশফুল।
অভিমানটা হেরে গেলে জয়ী হতো
আমাদের প্রেম...।
শহর থেকে শহরে ছুটে বেড়ানো
একটি দীর্ঘশ্বাস ফুঁটে উঠতো সাদা কাশফুলের
সুবাতাস হয়ে..।
প্রতিদিন অভিমান জিতে যায়......
বঞ্চিত হয় এই শহরের মানুষ গুলো কাশফুলের সুবাতাস থেকে...
আর আমরা হেরে যাই,
হেরে যায় আমাদের প্রেম।
শরতের হাওয়ায় দুলে কাশফুল,
ক্ষণে-ক্ষণে অবুঝ মনে দিয়ে যায় দোল।
কাশফুলের সাথে ছিল হৃদয়ের আনাগোনা;
কতো যে গভীর প্রণয় সে তো নয় অজানা ।
নীল আকাশের বুকে সাদা মেঘ ভাসে
কাশফুলের কম্পিত শিহরণ ছড়ায় বাতাসে ।
ছন্দময় ঢেউয়ে উচ্ছ্বল নদীর দু'কূল
তোমার আমার হৃদয়ে তখনও ছিল কাশফুল।
কাশফুল ঘিরে ছিল আমাদের স্বপ্ন দেখার দিন,
ফুলে-ফুলে জড়িয়ে আছে সেই আবেগ,
সময়ের স্রোতে অবিরত বয়ে গেছে কত জল;
হৃদয়জুড়ে আজও সেই স্মৃতির কোলাহল।
এমনি করে কত শরৎ চলে যায়,
কত কাশফুল ফোঁটে ঝরে যায়
কত পাখি এসে আবার ফিরে যায়।
শুধু তুমি আসো না!
গৃহ বন্দিনী
অনেক দিন চেনা মানুষ দেখিনি,
দেখিনি কেমন চলছে মানবতার শহর।
টিকটিকির স্বর্গবাস আমার!
এখানে আকাশ নেই
আছে ফিনফিনে কঙ্কালসার স্বপ্ন।
এখানে ঘাসের গালিচা নেই
আছে চেতনার পাল ছেঁড়া মাঠ।
রাত জাগা কুপির মতন
বদ্ধ ঘরে সব আশা ফুরিয়ে আসছে ।
রাত শেষে দিন-
ঘুরে ফিরে একই তন্ত্র মন্ত্র পাঠ
ঘোর বিহান থেকে গভীর রাত ।
ভাল্লাগেনা!
মৃত্যু আমার পাশে ঘুমায়,আমি না
অচেনা রাজ্যে আমি ঘুমাতে পারিনা।
আমি গৃহ বন্দিনী!
যদি এমন হয় চিরদিন
আমার বলে কিছু নেই
কেবল আগাছার মতো আঁকড়ে ধরেছি মাটি
তবে তো ঘাস আর মানুষে তফাৎ রইলোনা।
আমার দু'হাতে আগাছার শিকল
চোখে-মুখে অবিকল।
এখানে অনেক আছে অনেকেরই
আমার কেউ নেই, কিছু নেই তল্লাটে।
কেবল জেগে ওঠে একখানি জীর্ণ শীর্ণ আরশিতে নিলাভ স্বপ্ন।
আমি হাঁটি আর শব্দ করি
শব্দ দিয়ে নিরবতাকে জব্দ করি।
দরজা লাগায় দরাম দরাম
এভাবেই সামান্য ভয় জয় করছিলাম।
এখানে ও রোজ সূর্য ওঠে
জানালার ফোঁকড় দিয়ে উঁকি দেয় রদ্দুর।
বড্ড পানসে! করোটিসম।
আমার গাঁয়ের মতো তকতকে নয়।
তাইতো অপেক্ষা লেগে থাকে দুচোখের কর্ণিয়ায়।
অলস সময়,সব ফুরিয়ে গেছে
যতোটুকু যা ছিলো আমার।
বাবা মানুষটার ঝাড়ি ঝুড়ির লাল রং
নীলাভ হলো কিনা জানিনা,
মায়ের চোখের নীল কান্না
সাদা হয়ে এলো কিনা জানিনা।
প্রিয় ক্ষুদেরাজ যতো
শুকনো কাষ্ঠ নাকি ফলদ বৃক্ষের মতো চনমনা হলো তাও জানিনা!
হয়তো অপেক্ষার প্রহর ফুরিয়ে যায়
তবু ফুরায় না অপেক্ষার আয়োজন।
যদি কখনো এমন মুহূর্ত আসে
তখন তোমরা ও কি চেনা মুখ খুঁজবে?
খুঁজে ফিরবে কি আমার মতোন
প্রিয় মানুষের গুন্জন?
ক্ষ্যাপা
বলি কোন দেশ হতে এলি কোন বাটপার?
দুই হাতে কান ধরি পেটে-পিঠে গোটা চার!
কথা ঠিক বের করে নেব দ্যাখ এইবার।
ভাঙা হাড়ি,ঘটি-বাটি,সরা,পেয়ালা,দন
লুকিয়ছিস কোনখানে,কিনেছে কি মহাজন?
অলি গলি চোরাবালিয় চোখ রাখ সকলে
সাধু বলি হয়ে গেছে স্বস্তায় নকলে!
দু’টাকার লোভ ছাড়া আজ বেশ দু্ষ্কর
চুরিদায়ে জেলে আছে হাজী,গাজী,লষ্কর।
কাকে ছেড়ে বাঁধি কাকে চোর চেনা বড় দায়
সম্পদে চোখ বড়,হাত সবে কচলায়।
বড় চোর ফাঁদ পাতে,সিঁধ কাটে ছিঁচকে,
খায় বসে রাঘবেরা ঘারগোর মচকে।
একবার পেলে হাতে কচুকাটা,খচাখচ!
যতো থাক দল ভারী,হেড়ে গলা,গজগজ।
দ্বাড়িয়েছি পথ বেড়ে কোন রথে যাবি আয়?
বারেবারে ঘুঘু এসে বাড়া ভাত খেয়ে যায়!
টলবোনা কোন ও টোভে আছি ক্ষ্যাপা খাড়া
ও পাড়ার ক্যাচা কিবা বড় সাহেবেরা।
ঘর থেকে বেরুলেই মাথা দেব মুড়িয়ে,
যত লাগে জনবল দশ গাঁও জুড়িয়ে।
বহুকাল সয়ে গেছি আর কতো পারবো?
হাতে যদি না পারি তো দাঁতে পিষে মারবো!
দূর আকাশের তারা
দূর আকাশে তারা হয়ে,
তোমার চোখের তৃষ্ণা মেটাবো।
দক্ষিণের মৃদু হাওয়া হয়ে,
তোমার কাজল কালো কেশ উড়াবো।
সাগরের ঢেউ হয়ে,
তোমার হৃদয় জুড়াবো।
জোছনা রাতের আলো হয়ে,
তোমায় রাঙ্গাবো।
মেঘলা আকাশের বৃষ্টি হয়ে,
তোমায় ভেজাবো।