মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

বেসরকারি স্কুলে ভর্তি নীতিমালা জারি

বেসরকারি শিক্ষকদের অবসর ও কল্যাণ ফান্ডেও টাকা দিতে হবে শিক্ষার্থীদের

  • ভর্তির সময় এই অর্থ আদায় করা হবে
  • স্কুলে ভর্তির আবেদন আজ থেকে শুরু, চলবে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ০২:০০

বেসরকারি শিক্ষকদের অবসরে যাবার পর আর্থিক সুবিধা দেওয়ার জন্য চাকরি জীবনে তাদের কাছ থেকে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট বাবদ এক সময় মোট ৬ শতাংশ কেটে রাখা হতো, এখন কাটা হচ্ছে ১০ শতাংশ।

কিন্তু যে পরিমাণ অর্থ আদায় হয় তা দিয়ে দুই খাতের এই অবসরের টাকা দেওয়া যাচ্ছে না। অবসরে যাওয়ার পর তিন বছরেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়। এরপরও অবসর সুবিধা বোর্ড এবং কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে শিক্ষকদের ভোগান্তি পেতে হয়। এ কারণে কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ড কর্তৃপক্ষ সরকারের কাছে এককালীন বড় অঙ্কের অর্থ দাবি করে আসছিল।

তবে শিক্ষকদের এই ভোগান্তি লাঘবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এই টাকা আদায় করা হচ্ছে। বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বছরে ১০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এই টাকার মধ্যে ৭০ টাকা অবসর সুবিধা ফান্ডে, বাকি ৩০ টাকা কল্যাণ ট্রাস্টের ফান্ডে জমা হবে। ভর্তির সময় বাধ্যতামূলকভাবে এই টাকা আদায় করা হবে।

এই টাকা আদায়ের বিষয়টি বেসরকারি স্কুলে ভর্তি নীতিমালার একটি ধারায় যুক্ত করা হয়। নীতিমালায় বলা হয়, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক/কর্মচারীগণের অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিলের জন্য ভর্তিকালীন সময়ে শিক্ষার্থী প্রতি ১০০ টাকা গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট হিসাব খাতে জমা দিতে হবে। ৭০ টাকা অবসর এবং ৩০ টাকা কল্যাণ তহবিলের সংশ্লিষ্ট হিসাব খাতে জমা প্রদান করতে হবে।

গতকাল সোমবার দেশের বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তির জন্য এই নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

নীতিমালায় ভর্তির বিষয়ে বিস্তারিত বিষয় তুলে ধরা হয়। নীতিমালায় বলা হয়েছে, ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের ক্যাচমেন্ট এরিয়ার জন্য ৪০ শতাংশ কোটা থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা/শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং পুত্র-কন্যা পাওয়া না গেলে নাতি-নাতনিদের ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের শিশুদের জন্য ১ শতাংশ,  বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ন্যূনতম যোগ্যতা থাকার শর্তে ভর্তির ক্ষেত্রে ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানদের ক্ষেত্রে মহানগর, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। এছাড়া ম্যানেজিং কমিটির সমস্যা ও শিক্ষকদের জন্যও ভর্তি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

নীতিমালা অনুযায়ী, সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে মফস্বল এলাকায় ৫০০ টাকা, পৌর (উপজেলা) এলাকায় ১ হাজার (১ হাজার), পৌর (জেলা সদর) এলাকায় ২ হাজার  এবং ঢাকা ব্যতীত অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩ হাজার টাকার বেশি নেওয়া যাবে না।

এছাড়া ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকার অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে পারবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং এমপিওবহির্ভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য শিক্ষার্থী ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফিসহ বাংলা মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা এবং ইংরেজি ভার্সনে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করতে পারবে। উন্নয়ন খাতে কোনো প্রতিষ্ঠান ৩ হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না। একই প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এক ক্লাস থেকে পরবর্তী ক্লাসে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতি বছর সেশন চার্জ নেওয়া যাবে। তবে পুনঃ ভর্তির ফি নেওয়া যাবে না।

ভর্তির ফি বাবদ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অর্থের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা যাবে না, করলে সরকার এমপিও বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ভর্তির আবেদন অন-লাইনে আগামীকাল ২৪ অক্টোবর সকাল ১১টা হতে শুরু হয়ে ১৪ নভেম্বর  বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলমান থাকবে। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির আবেদন ফি ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে যা শুধু টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল হতে এসএমএসের মাধ্যমে প্রদান করা যাবে। প্রতি শ্রেণি শাখায় শিক্ষার্থী হবে ৫৫ জন।

ইত্তেফাক/এমএএম