মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ধূমপান পরিহার ও দূষণমুক্ত পরিবেশে শ্বাসতন্ত্রের জটিল রোগ রোধ সম্ভব

আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:৩৩

শ্বাসতন্ত্রের জটিল রোগ ‘ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমানারি ডিজিজ’—(সিওপিডি)। বিশ্বে প্রতি বছর এই রোগে কমপক্ষে ৩০ লাখ মানুষ মারা যায়। অসংক্রামক রোগগুলোর মধ্যে সিওপিডি একটি অন্যতম শীর্ষস্থানীয় রোগ। পৃথিবীব্যাপী মৃত্যুর সব কারণের মধ্যে এই রোগটির অবস্থান তৃতীয়। ধূমপান পরিহার ও দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার মাধ্যমে সিওপিডি রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই ভয়ংকর এই রোগ সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে এবং প্রতিরোধে সচেতন হতে হবে।

গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিশ্ব সিওপিডি দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা এসব তথ্য জানান। দিবসটি উপলক্ষ্যে এই সেমিনার ও শোভাযাত্রার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্ষব্যাধি বিভাগ।

শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল ফোয়ারা থেকে শুরু হয়ে এ-ব্লক অতিক্রম করে টিএসসি হয়ে ডি-ব্লক গিয়ে শেষ হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, বক্ষব্যাধি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রাজাশীষ চক্রবর্তী, সহযোগী অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলাম প্রমুখসহ বক্ষব্যাধি বিভাগের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, চিকিত্সক, রেসিডেন্ট শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) ও বক্ষব্যাধি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন বলেন, এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘ব্রিথিং ইজ লাইফ-অ্যাক্ট আরলিয়ার’—এই রোগে দীর্ঘমেয়াদি কাশি, কফ নিঃসারণ ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা ধীরে ধীরে প্রকট হয়ে উঠে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সমস্যাগুলো প্রকট হয় এবং একসময় এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে, তখন রোগী নিজের দৈনন্দিন কাজকর্ম করতেও শ্বাসকষ্টে ভোগেন। একই সঙ্গে দানা বাঁধে সিওপিডিজনিত অন্যান্য জটিলতা। যেমন হৃদরোগ, মাংসপেশির দুর্বলতা, ওজন হ্রাস, বিষণ্নতা, ফুসফুসের ক্যানসার ইত্যাদি নানা ধরনের সমস্যা। তাই রোগ প্রতিরোধে গুরুত্ব দিতে হবে। সিওপিডি থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য আগেভাগেই গুরুত্ব দিতে হবে। এখনই ধূপমান প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। আগেভাগে এই রোগটি চিহ্নিত করতে পারলে এবং চিকিত্সা শুরু করতে পারলে এই রোগের কারণে স্বাস্থ্য খাতের ওপর যে বাড়তি চাপের সৃষ্টি হয়েছে তা দূর হবে।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, সিওপিডি দিবস পালন অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ। মুখে মাস্ক অবশ্যই পরতে হবে। কলকারখানার ধোঁয়াসহ সব ধরনের ধোঁয়া থেকে দূরে থাকা, তামাক চাষ বন্ধ করা এবং তামাক জাতীয় দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে সিওপিডিও রোগ অনেকটাই বিনাস করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞ এই চিকিত্সকরা বলেন, ধূমপানই সিওপিডির প্রধানতম কারণ। তাই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করতে হবে।

তারা বলেন, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এই রোগে ভোগা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রতি বছর এই রোগে বিশ্বে কমপক্ষে ৩০ লাখ মানুষ মারা যায় এবং কমপক্ষে ৩০ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়। তবে অভ্যন্তরীণ বায়ুদূষণ হ্রাস করা, জৈব জ্বালানির ক্ষতিকর দিক থেকে মানুষকে রক্ষা করা এবং ধূমপানে মানুষকে নিরুত্সাহিত করার মাধ্যমে এই রোগটি সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ইত্তেফাক/এসকে