গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ঠাকুরগাঁওয়ে আলুর দাম কেজিতে ২৫-৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। ১৪-১৫ দিন আগেও প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) আলু চাষিরা বিক্রি করেছিলেন ২ হাজার ২৫০-২ হাজার ৩০০ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০০-৯৫০ টাকায়। তারা বলছেন, দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় উৎপাদন খরচই উঠছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে আমদানির খবর পেয়ে আলু কেনা কমিয়ে দিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন, চিলারং, সালান্দর, রহিমানপুর, মোহাম্মদপুর, চাড়োলসহ অনেক এলাকার চাষিরা জমি থেকে আলু উত্তোলন করছেন। সদর উপজেলার নারগুন এলাকার কেরামত বলেন, বর্তমানে বাজারে ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও ঐ আলু কৃষকের কাছ থেকে পাইকাররা ১৭-১৮ টাকা দরে নিচ্ছেন। এখন আলু বিক্রি করে কোনো লাভ হচ্ছে না। একই এলাকার শাহজাহান জানান, বর্গা নিয়ে ১২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন তিনি। এক বিঘায় (৫০ শতক) খরচ হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। আলু পাওয়া যাবে ৯০ মণের মতো। বর্তমানে এক বিঘা জমির আলু বিক্রি করে পাওয়া যাচ্ছে ৬৩ হাজার টাকা। সে হিসাবে প্রতি বিঘায় ৬-৭ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। জেলার অন্য উপজেলায়ও আলু তুলেছেন কৃষকরা। হরিপুর উপজেলার আমগাঁও গ্রামের চাষি পুষ্প রায় জানান, ধান-চাল ও গমের মতো আলুর দামও সরকার নির্ধারণ করে দিলে চাষিরা লোকসান থেকে রক্ষা পাবেন।
আলুর পাইকারি ক্রেতা সাদেক হোসেন বলেন, বর্তমানে পুরোদমে আলু ওঠা শুরু হয়েছে। তাই দাম কমছে। এছাড়া ভারত থেকে আমদানির খবর পেয়ে মূল্য হুহু করে কমে যাচ্ছে। হিমেস রানা নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, চলতি মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি আলু ৬৫-৭০ টাকা পর্যন্ত কৃষকদের কাছ থেকে কিনেছি। বর্তমানে ১৭-১৮ টাকা দরে কিনছি।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আলুর ব্যাপক দরপতনে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ভালো দাম পাওয়ার জন্য আলু সংরক্ষণ ও জাতভেদে চাহিদা অনুযায়ী চাষ করার পরামর্শ দেন তিনি।