মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আরকান রাজ্যে দুই সপ্তাহ জুড়ে চলা সংঘাত থেকে পালিয়ে আসা আরও ২ জন বিজিপির সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে থেমে থেমে গোলাগুলি শব্দ শোনা গেলেও সকাল থেকে এ পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি)সন্ধা ৭টার দিকে টেকনাফের উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে এ ২ জন ঢুকে পড়ে। এর আগে দুপুরের দিকে ৬৪ জন্য হোয়াইক্যং সীমান্ত পয়েন্ট থেকে ডুকলে তাদেরকেও বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়।
জানা গেছে, ওপারে চলমান সংঘাতের কারণে মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া মর্টারশেল ও গুলিতে ঘুমধুমে ২ জন নিহত ও ২০ জনের অধিক লোক আহতসহ চাষের জমি ও বাড়িতে গোলা পড়ায় ঘুমধুম তুমব্রু ও উখিয়ার পালংখালি ও টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে আতঙ্কের ছড়িয়ে পড়লে ঘুমঘুম তুমব্রু সীমান্তবর্তী এলাকার ৪ হাজার মানুষ সরে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গোলাগুলির শব্দ তেমনটি শোনা না গেলেও ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীদের মধ্যে।
তুমব্রু স্থানীয় বাসিন্দা আলী হোসাইন বলেন, মিয়ানমারের ওপারে গোলাগুলির ঘটনায় আমরা বসতঘর ছেড়ে উখিয়াতে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে চলে গিয়েছি। এখন দেখতে আসলাম তুমব্রু সীমান্তের পরিস্থিতি কী রকম। তবে দেখে মনে হলো কিছুটা শান্ত। কিন্তু ভয়ের মধ্যেই আছি তবুও কখন যে আবারও শুরু হয় গোলাগুলি। ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পারে না। সীমান্তের কাছে আমাদের চাষের জমিন। সেখানেও যেতে এখন ভয়ে হচ্ছে। কাজ কর্ম ছাড়া সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে।
হোয়াইক্যংয়ের স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম বলেন, সীমান্তের কাছে আমার বাড়ি, গরু-ছাগলগুলো সীমান্তের কাছে খাবার খেতে গেলে এগুলো আনতে গেলে এখন ভয় হচ্ছে। কারণ গত বুধবার হোয়াইক্যং সীমান্ত পয়েন্টে ব্যাপক গোলাগুলি ঘটনা চলমান থাকায় মিয়ানমার বিজিপির ৬৪ জন সদস্য এপারে ঢুকে পড়ে। তখনো চলতে তাকে গোলাগুলি। এর আগেও মর্টারশেল ও গুলির শব্দে দিনের বেলায় বাড়ি থাকতাম না, রাতে বাড়িতে আসলে ঘুমাতে পারতাম না, সব সময় ভয়ের মধ্যেই থাকতে হচ্ছে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারি বলেন, সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির ঘটনায় এপারের সীমান্তবর্তী মানুষের জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। ঘর থেকে বের হতে ও কাজে যেতে ভয় পাচ্ছে।
অপরদিকে, এর আগে ধাপে ধাপে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিপির ৩২৮ জন সদস্য এপারে ঢুকেন, পরবর্তীতে রাতে আসা ২ জনসহ মোট ৩৩০ জন বাংলাদেশে বিজিবির হেফাজতে আশ্রয়ে রয়েছে। তবে এসব বিজিপির সদস্যদের মিয়ানমারের কখন ফেরত পাঠানো এ বিষয়ে কোনো সঠিক তথ্য জানা যায়নি।