কুমিল্লায় আরাফাত হোসেন বাপ্পী নামের এক শিশুকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তার সৎ বাবা মো. সেলিম ওরফে রুবেলকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক রোজিনা খান এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত সেলিম ওরফে রুবেল জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার ধনাইতরী গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় শিশুটির মা রুমা আক্তার এবং দণ্ডপ্রাপ্ত রুবেল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। নিহত ওই শিশু স্থানীয় একটি মাদরাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
আদালত ও শিশুর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে সদর দক্ষিণ উপজেলার ভাটপাড়া তারাপুর গ্রামের রুমা আক্তারকে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে বিয়ে করেন মো. সেলিম ওরফে রুবেল। এর আগে রুমা আক্তারের বিয়ে হয়েছিল এবং ওই সংসারের সন্তান আরাফাত হোসেন বাপ্পী (৭)। বিয়ের পর রুমা তার সন্তানসহ রুবেলের সঙ্গে দাম্পত্য জীবন শুরু করে। একপর্যায়ে রুমা গর্ভবতী হয়ে পড়লে পরিবারে কলহ দেখা দেয়। ঘটনার সপ্তাহখানেক আগে সিজারিয়ান অপারেশনে রুমা এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। এতে হাসপাতাল থেকে অসুস্থ রুমা চলে যান তার বাবার বাড়িতে। এ সময় সৎ সন্তান বাপ্পীকে হত্যার পরিকল্পনা করে আসামি রুবেল।
২০২২ সালের ১৫ এপ্রিল বাপ্পীকে কৌশলে শ্বশুড় বাড়ি থেকে নিজ গ্রামে নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে রাতে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহ ধনাইতরী গ্রামের একটি ডোবার কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখেন।
এ ঘটনায় নিহতের মামা আল-আমিন বাদী হয়ে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে একই বছরের ৩০ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
আদালতের এপিপি সেলিম মিয়া জানান, আদালত আসামি রুবেলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে ও মামলার শুনানী শেষে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।
মামলার বাদী আল-আমিন বলেন, ‘আমরা আদালত থেকে ন্যায় বিচার পেয়েছি। দ্রুত ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে বলে আশা করছি।’