বাংলাদেশি স্বামীর প্রতি গভীর ভালোবাসা ও প্রেমের টানে সুদূর আফ্রিকা থেকে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ছুটে এসেছেন ফান্সিসকা নামে এক তরুণী। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় একটি বিমানবন্দরের সিনিয়র ম্যানেজার ও একটি ট্রভেলস অ্যান্ড ট্যুর প্রতিষ্ঠানে সহকারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদে কর্মরত।
বিদেশী তরুণীকে নিয়ে রীতিমতো হৈচৈ পড়ে গেছে তার স্বামীর বাড়িতে। গ্রামবাসী বিদেশি বধূকে দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছে। ইতিমধ্যে গ্রামবাসীসহ স্বামীর বাড়ির মানুষদের সঙ্গে বেশ সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছেন এই বিদেশি তরুণী। টুকটাক বাংলা কথাও বলছেন।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ত্রিবেনী গ্রামের সাজেন হোসেন (২৭) ২০১৮ সালে আফিকার সী সেলস আইল্যান্ডে যান। সেখানে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে সেফ হিসেবে চাকরি নেন তিনি। সেখানেই পরিচয় হয় সী সেলস বিমানবন্দরের সিনিয়র ম্যানেজার ফ্রান্সসিসকার সঙ্গে। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে গভীর ভালোবাসা ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে ২০২১ সালে নিজ নিজ পরিবারের সম্মতিতে সেখানে বিয়ে করেন তারা। স্বামীর নামের অংশ যুক্ত করে নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন ফ্রান্সিসকা হোসাইন।
গত ১৬ জানুয়ারি ছুটিতে বাংলাদেশে নিজ বাড়িতে আসেন সাজেন। তবে স্বামীর অনুপস্থিতিতে গভীর শূন্যতা অনুভব করেন ফ্রান্সসিসকা। স্বামীকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেন তিনি। স্বল্প সময়ের ছুটি পেয়েই গত ২ ফেব্রুয়ারি ছুটে আসেন বাংলাদেশে। আসার পর থেকেই স্বামী ও স্বামীর পরিবারের সঙ্গে তার আন্তরিকতা ও ভালোবাসাসুলভ আচরণে মুগ্ধ এলাকাবাসীসহ সাজেনের পরিবার ও নিকটআত্মীয়রা।
সাজেনের বাবা আবদুস সাত্তার বলেন, আমার ছেলে আফ্রিকান মেয়ে বিয়ে করেছে। আমার ছেলে তার বউ নিয়ে দেশে এসেছে। ছেলে ও বৌমাকে দেখে আমি অনেক খুশি। আমার খুব আনন্দ লাগছে। বৌমা অনেক ভালো মেয়ে।
সাজেনের মা আফসানা আক্তার বলেন, সাজেন আমাদের একমাত্র ছেলে। ছোটবেলা থেকে আমার ছেলে বলতো তার খুব শখ সে বিদেশে যাবে। বিদেশে গিয়ে বিদেশি মেয়ে বিয়ে করবে। আল্লাহ তার ইচ্ছা পূরণ করেছেন। আমাদের বিদেশি বৌমা অনেক ভালো।
বিদেশি স্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী বাংলাদেশি যুবক সাজেন হোসেনও। তিনি জানান, বিয়ের পর থেকে ফ্রান্সসিসকা পশ্চিমা সংস্কৃতি ও ইসলাম ধর্মে নিষিদ্ধ হারাম খাবার পরিহার করে ইসলামী শরিয়তের বিধিবিধান মেনে চলছেন।