ঈদ উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় অসহায় ও দরিদ্র মানুষদের মাঝে বিনামূল্যে ভিজিএফের চাল বিতরণে ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এসময় স্থানীয় সংবাদকর্মীরা চাল বিতরণের ছবি ধারণ করতে গেলে পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যা মেজাজ হারিয়ে সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত ও হেনস্থা করেন।
সরজমিনে জানা গেছে, রবিবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় ভিজিএফ কার্ডধারীদের মধ্যে ১০ কেজির যায়গায় ৯ থেকে সাড়ে ৯ কেজি করে চাল বিতরণ করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এমন অভিযোগ কার্ডধারীদের।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেক কার্ডধারীকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা। কিন্তু কার্ডধারীদের ৯ থেকে সাড়ে ৯ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গরিব-অসহায়দের না দিয়ে ভিজিএফের কার্ড দেওয়া হয়েছে বিত্তবানদেরও। এমন অভিযোগ চাল নিতে আসা সুবিধাভোগীদের।
এমন খবর পেয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ছবি ধারণ করতে গেলে ঠাকুরগাঁও মেয়র আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যার ছেলে বাধন ইসলাম সংবাদ কর্মীদের ক্যামেরা-মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং ভিডিও ডিলিট করার জন্য বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দেন।
পরে ভুক্তভোগীরা প্রতিবাদ জানালে মেয়র তেরে এসে হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কি করেন। এক পর্যায়ে লাঞ্ছিতের স্বীকার হন সিএনএনের স্থানীয় সংবাদকর্মী আব্দুল আওয়াল। এসময় পরিবেশ উত্তপ্ত হলে সাময়িকভাবে চাল বিতরণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে সংবাদকর্মীরা ফিরে গেলে আবারো চাল বিতরণ করা হয়।
মেয়রের এমন উগ্র আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পৌরবাসী ও স্থানীয় সাংবাদিকরা। তারা বলছেন, মেয়রের এমন আচরণ মোটেও আশা করা যায় না। চাল বিতরণে কম দেওয়ার অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিলো।
লাঞ্ছনার বিষয়ে সাংবাদিক আব্দুল আওয়াল জানান, উনি যেভাবে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে লাঞ্ছিত করেছেন তা খুব হতাশাজনক। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরূপ মন্তব্য করছে অনেকেই।
যদিও পরবর্তীতে মেয়র আঞ্জুমান আরা লাঞ্ছিতের বিষয়টি অস্বীকার করেন। বলেন, ‘আমি বাক-বিতণ্ডা দেখে তখন ওখানে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করি মাত্র।’
তবে চাল ওজনের কম দেওয়ার অভিযোগের ব্যাপারে স্বীকার করেন তিনি। মেয়র বলেন, ‘ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ শুনে দ্রুত পৌরসভায় ছুটে আসি।’ পরে ১০ কেজি পূরণ করে তালিকাভুক্তদের চাল বিতরণ করা হয় বলে দাবি তার।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডে ৪ হাজার ৬২১জন ভিজিএফ কার্ডধারীর জন্য চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।