বাংলার সংস্কৃতি বিদেশের মাটিতে সমুন্নত রাখতে এবং পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়াসে ‘বাংলা বর্ষবরণ’ উৎসব উদযাপন করা হয়েছে।
শনিবার সুইজারল্যান্ডের অলিম্পিক শহর লুজানে যথাযোগ্য মর্যাদায় বর্ষবরণ উদযাপন করা হয়। লুজান শহরে বসবাসকারী বাংলার সংস্কৃতি প্রেমী কিছু প্রবাসী বাঙালির উদ্যোগে দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই মঙ্গল শোভাযাত্রার বের করা হয়। বাঙালির ঐতিহ্যবাহী রং বেরঙের পোশাকে ও নানা ধরনের ব্যানার এবং হরেক রকমের ফেস্টুন হাতে বাজনার তালে তালে বিপুল সংখ্যক বাঙালি ও বিভিন্ন দেশের নারীপুরুষ, কিশোর-কিশোরী ও শিশুরা অংশগ্রহণ করে মঙ্গল শোভাযাত্রায়।
শোভাযাত্রা শেষে স্থানীয় একটি হলে আয়োজিত মেলায় বাংলাদেশের শাড়ি, চুড়ি, খেলনা, ঐতিহ্যবাহী পিঠা-পুলি, ফোস্কা-চাট ও খাবারের সমন্বয়ে সাজানো হরেক রকমের স্টল দর্শক ও অংশগ্রহণকারীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। পরে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন মেলার উদ্যোক্তাসহ অংশগ্রহণকারীরা।
মধ্যাহ্নভোজ শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। লুজান আওয়ামী লীগের সভাপতি অশোক কুমার সরকার রবির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মো. সুফিউর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান প্রবাসীদের এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
শশীর খানের নেতৃত্বে ও সঞ্চালনায় স্থানীয় ও জেনেভা থেকে আগত শিল্পীদের সমন্বয়ে নাচ ও গানের এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত ও এসো হে বৈশাখ এসো এসো গানের মাধ্যমে শুরু হওয়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ সংগীত পরিবেশন করেন গৌরিচরণ রিমি, সমীরণ বড়ুয়া জিশু, ড. সেগুপ্তা মাহমুদ চেরি, রুমি বড়ুয়া, রবিন বড়ুয়া, তুলি বড়ুয়া, সুপ্ত খান, ফাইজা ফাহমি রহমান, বৃষ্টি বড়ুয়া ও শিশু শিল্পী এরোয়ান কিংশুক পালসহ আরও অনেকে।
নৃত্যে অংশগ্রহণ করেন সিমনা সরকার, শিশু শিল্পী এরোয়ান কিংশুক পাল, মায়া জুনায়েদ রোডরিগেস, এলিনা গৌরিচরন, রিয়ানা গৌড়ীচরন ও তিমন ঢালি প্রমুখ।
বিকালে জমবে মেলা বটতলা হাটখোলা গান ও নৃত্যের তালে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সমাপ্ত করা হয়।
এ সময় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রথম সচিব কামরুল ইসলাম, জাতিসংঘে কর্মরত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ড. সেলিম রেজা, সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি হারুন অর রশিদ বেপারী, সুইস বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মুরাদ খান, সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল খান ও সুইজারল্যান্ড শ্রমিক লীগের সভাপতি আব্দুর রব খাদেমসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দূতাবাস ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত প্রবাসী বাঙালি পরিবার পরিজন শিশু-কিশোর-কিশোরী ও নানা বয়সের প্রবাসীরা সপরিবারে অনুষ্ঠানে অংশ নেন। অনুষ্ঠানটির সার্বিক আয়োজনে ও সহযোগিতায় ছিলেন অশোক কুমার সরকার রবি, বিপুল তালুকদার, রনি মিয়া, আব্দুল হক মোল্লা, আব্দুর রব খাদেম, স্বপন কুমার সাহা, মাহবুব হাসান সুমন, মোতালেব জীবন ও ফারুকুল ইসলাম প্রমুখ।