প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অপহরণ ও মারধরের অভিযোগে নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবীব রুবেলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। আগামী ৩ দিনের মধ্যে এ নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস স্বাক্ষরিত এ নোটিশ দেওয়া হয়।
কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের সম্পৃক্ততা থাকা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার একজন আসামি আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতেও তার সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করেছেন, যা দলীয় আচরণবিধির পরিপন্থী। এর ফলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এমতাবস্থায় লুৎফুল হাবীবের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে ব্যাপারে কারণ দর্শানোর জন্য তাকে ৩ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, শুক্রবার বিকালে প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশসহ একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ লুৎফুল হাবীব রুবেলকে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া শনিবার উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার পর রুবেলকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ সংক্রান্ত লিখিত নোটিশ রুবেলকে দেওয়া হবে। রুবেল দলীয় নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচন করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হবে।
এ বিষয়ে লুৎফুল হাবীব গণমাধ্যমকে বলেন, দেলোয়ারকে অপহরণ বা মারধরের ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। যারা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের আমি কোনো নির্দেশনাও দিইনি। অনুমানের ভিত্তিতে আমাকে জড়িত করে নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। গণমাধ্যমে অভিযোগ করা হচ্ছে। সঠিক তদন্ত করলে আমার দাবির সত্যতা পাওয়া যাবে।
এর আগে গত সোমবার বিকালে সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দোলোয়ার হোসেন অনলাইনে দাখিল করা মনোনয়নপত্রের অনুলিপি নাটোর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে জমা দিতে যান। সেখান থেকে প্রতিমন্ত্রী ও তার শ্যালক লুৎফুল হাবীবের ঘনিষ্ঠরা দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ করে শারীরিক নির্যাতন করে অচেতন অবস্থায় নিজ বাড়ির সামনে ফেলে যায়। পরে দেলোয়ার হোসেনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আ নেওয়া হয়। এখনও তিনি ওই হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
অপহরণের ঘটনায় দেলোয়ার হোসেনের ভাই অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। এ পর্যন্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে একজন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন।
ওই জবানন্দিতে তিনি জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ নেতা ও নির্বাচনের প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের পক্ষ হয়ে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।