মাদারীপুরের শিবচরের প্রান্তিক পর্যায়ের জন-সাধারণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কমিউনিটি ক্লিনিকের গুরুত্ব তুলে ধরে ক্লিনিকগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি।
শুক্রবার (২৪ মে) নূর-ই-আলম চৌধুরী অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী।
এসময় তিনি উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর খোঁজ-খবর নেন। ক্লিনিকগুলোর সিএইসিপিসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে নানা সমস্যার কথা জানতে চান। প্রশ্ন-উত্তর পর্বে ক্লিনিকগুলো পরিচালনায় নানা সমস্যার কথা বেরিয়ে আসে। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনায় নানা অবহেলার চিত্র ফুটে উঠে। এসময় তিনি সংশ্লিষ্টদের অফিস টাইম না মানলে চাকরি হারানোর হুঁশিয়ারি এবং শিবচরে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক সংশ্লিষ্টদের ২ মাসের সময় বেঁধে দেন।
চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, ‘অফিসের নির্ধারিত সময়ের আগে কেউ বাসায় যাবেন না। অফিস টাইম ৩টায় হলে ঠিক ৩টাতেই যাবেন। অনিয়ম করলে অ্যাকশন নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’
চিফ হুইপ আরও বলেন, ‘আমরা আপনাদের দুই মাস সময় দেবো। হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে পরিষ্কার-পরিচ্ছনতা ঠিক করবেন। আমি এমনও দেখেছি, রোগীরা রাস্তায় লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। এটা হবে না। তাদের বসার ব্যবস্থা, বাথরুম ফ্যাসিলিটি আপনাকে করতে হবে। সেবার মান বাড়াতে হবে। নিয়ম না মানলে সরকারি-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা এর মধ্যে ৪২টা কমিউনিটি ক্লিনিকেই আসবাবপত্রসহ যে সমস্যা আছে, তার জন্য অনুদান দেবো।’
মতবিনিময় সভায় চিফ হুইপ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর সমস্যা চিহ্নিত করে তা নিরসনে তাৎক্ষণিকভাবে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি, সভাপতি, জমিদাতা, চিকিৎসক, উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসক, কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিদের মতামত শোনেন। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে দুই মাসের সময় বেঁধে দেন। আসবাবপত্রসহ নানা সমস্যা সমাধানে নগদ অর্থ বরাদ্দ দেন ও কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিদের জন্য প্রশিক্ষণের নির্দেশ দেন সিভিল সার্জনকে।
মতবিনিময় সভায় ওয়ার্ড পর্যায় থেকে উপজেলা পর্যায়ের সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চিকিৎসক, বেসরকারী ক্লিনিক মালিকসহ স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট সবাই অংশ নেন।
মতবিনিময় সভার শুরুতেই জনপ্রতিনিধিদের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পরিদর্শনের খোঁজ-খবর নেন। এরপর আইএইচটির চিকিৎসক, কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি, চিকিৎসক, প্রাইভেট ক্লিনিক সংশ্লিষ্টদের কাছে বিভিন্ন প্রশ্ন করে সেবার মান যাচাই করেন। এসময় স্বাস্থ্যখাতের বেহাল দশায় চিফ হুইপ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এসময় মাদারীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুনির চৌধুরী, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুনির আহমেদ খান, শিবচর ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি রাজিয়া চৌধুরী, শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মোল্লা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন, নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ড. মো. সেলিম, পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন খান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাতিমা মেহজাবিনসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে চিফ হুইপ ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে জেলা পরিষদের আয়োজনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দরিদ্র বেকার নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করেন।