শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

মালয়েশিয়া যেতে পারেননি ১৭ হাজার কর্মী

কারণ অনুসন্ধান করতে তদন্ত কমিটি গঠিত

আপডেট : ০৩ জুন ২০২৪, ০১:৩০

মালয়েশিয়ায় সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ে বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র পেয়েও দেশটিতে ১৬ হাজার ৯৭০ জন কর্মী যেতে পারেননি বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী। একই সঙ্গে কর্মীদের যেতে না পারার কারণ খুঁজে বের করতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে। রোববার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে সৃষ্ট সংকট সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এসব তথ্য জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৩১ মে পর্যন্ত ৫ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৬ জনকে মন্ত্রণালয় (প্রবাসী কল্যাণ) অনুমোদন দিয়েছে। বিএমইটির ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪২ জনকে। আর ৩১ মে পর্যন্ত ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭২ জন গেছেন মালয়েশিয়ায়। সে হিসাবে কমবেশি ১৬ হাজার ৯৭০ জন যেতে পারেননি। সংখ্যাটা কিছুটা কমবেশি হতে পারে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান বলেন, যারা যেতে পারেননি—এ ব্যাপারে আমরা একটা তদন্ত কমিটি করেছি। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি তৈরি করেছি। অতিরিক্ত সচিব (মন্ত্রণালয়ের) নূর মোহাম্মদ মাহবুবকে কমিটির প্রধান করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কমিটি তাদের সুপারিশ দেবে। যারা এটার জন্য দায়ী হবেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় যেতে না-পারা কর্মীরা তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ করতে পারবেন এবং প্রয়োজন হলে কর্মীদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা হবে।

মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার বারবার সিন্ডিকেট বা চক্রের কারণে বন্ধ হচ্ছে। সিন্ডিকেটে সরকারের প্রভাবশালী সংসদ সদস্যদের নামও এসেছে গণমাধ্যমে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে বা যারা এই তদন্তের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত হবেন তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সিন্ডিকেটের বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সিন্ডিকেটে বিশ্বাস করি না। আমরা চাই, আমাদের আড়াই হাজার এজেন্ট আছে, তাদের মাধ্যমে কর্মীরা বিদেশ যাক।’

শেষ সময়ে কর্মীদের ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ছাড়পত্র তারা যখন চেয়েছে, রিক্রুটিং এজেন্সি যখন চেয়েছে আমরা প্রয়োজনীয়তা দেখে দ্রুতই তা দিয়েছি। না হলে সবাই বলবে, মন্ত্রণালয় দেয়নি। সে কারণে যে সময় যেটার প্রয়োজন হয় সেটার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব রুহুল আমিন বলেন, ২৪ মের পর থেকে যাদের টিকিট ছিল শুধু তাদের ক্ষেত্রে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে কাউকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

কর্মীদের না যেতে পারার পেছনে মন্ত্রণালয়ে কোনো গাফিলতি ছিল না—দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ে গাফিলতি হয়নি। এখনো আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা এক সপ্তাহ আগে চিঠি দিয়েছিলাম মালয়েশিয়া সরকারকে, আরো এক সপ্তাহ বাড়ানোর জন্য। মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের সঙ্গে আলাপ করছি। তিনি ৫ তারিখে মন্ত্রণালয়ে আসবেন। তখন তার সঙ্গে আবারও এ বিষয়ে কথা হবে।’

বন্ধ হয়ে যাওয়া মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমবাজার খুলবে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সরকার মালয়েশিয়ান সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ফের খুলবে।’

ইত্তেফাক/এমএএম