বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন নিহত সেনা কর্মকর্তা তানজীমের বৃদ্ধ মা

আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০৭

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারানো লেফটেন্যান্ট মো. তানজিম সারোয়ার নির্জনকে (২৩) টাঙ্গাইলে দাফন করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার বিকেলে জানাজা শেষে সদর উপজেলার করের বেতকা গ্রামের কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। তরুণ এই সেনা কর্মকর্তাকে হারিয়ে গ্রামে মাতম চলছে।

লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার করের বেতকা গ্রামের সারোয়ার জাহান ওরফে দেলোয়ারের ছেলে। পাবনা ক্যাডেট কলেজ থেকে তিনি উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, লেফটেন্যান্ট তানজিম ৮২তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে ২০২২ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে আর্মি সার্ভিস কোরে (এএসসি) কমিশনড লাভ করেন। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া এলাকায় অভিযানে গিয়ে ডাকাতের হামলায় তিনি নিহত হন।

বিকেলে তানজিমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাবা সারোয়ার জাহান শোকে পাথর। ছেলের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তানজিমের মা নাজমা বেগম। স্বজন ও প্রতিবেশীরা তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন। কাঁদতে কাঁদতে সারোয়ার জাহান বলছিলেন, ‘এমন মৃত্যু যেন আর কারও না হয়। আর যেন কোনো বাবার এমন শোক পেতে না হয়। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই। তানজিমই ছিল আমার একমাত্র ছেলে।’

তানজিম নিহতের খবর এলাকায় জানাজানি হলে মঙ্গলবার সকাল থেকেই তাঁর বাড়িতে ভিড় করেন আত্মীয়স্বজনসহ এলাকাবাসী। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে হেলিকপ্টারে করে তানজিমের লাশ টাঙ্গাইল শহরের হেলিপ্যাডে আনা হয়। সেখান থেকে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে লাশ সদর উপজেলার করের বেতকা গ্রামে নিজ বাড়িতে নেওয়া হয়। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

তানজিমের মামাতো ভাই মীর পলাশ জানান, ছোটবেলা থেকেই তানজিমের ইচ্ছা ছিল সেনা কর্মকর্তা হওয়ার। তাঁর সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছিল। কিন্তু ডাকাতের আক্রমণে সব শেষ হয়ে গেল।

বিকেলে বোয়ালী মাদ্রাসা মাঠে তানজিমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও এলাকার সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন। পরে করের বেতকা কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

ইত্তেফাক/এমএএম