শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

তারুণ্য ও যৌবনের গান বললেই হেলাল হাফিজের কথা মনে পড়ে: ফারুকী

আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:০৪

‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’- অমর এ পঙ্‌ক্তি'র রচয়িতা প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজের ২য় জানাজা জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় অন্তর্ব্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং ভক্ত-অনুরাগী সহ বিশিষ্টজনেরা অংশ নেন।

এ সময় প্রয়াত কবির বড় ভাই দুলাল হাফিজ, ছোট ভাই নেহাল হাফিজসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

হেলাল হাফিজের পরিবারের সদস্যরা জানান, তীব্র অসুস্থ হওয়ার পর অনেকবার তাকে হাসপতালে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি বলেছিলেন, ‌‘আমার আর সময় নেই, আই কুয়াইট’।

কবি হেলাল হাফিজের ২য় জানাজা জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

তারুণ্য ও যৌবনের গান বললেই হেলাল হাফিজের কথা মনে পড়ে বলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

ফারুকী বলেন, ‘আমার জানা নেই, মাত্র একটি কবিতার বই লিখে একটি জাতির শিল্প-সংস্কৃতির ইতিহাসে এত প্রভাব আর কোনো কবি রাখতে পেরেছেন কী না। উনি খুব বেশি বই লিখেননি। কিন্তু আপনি দেখেন। তারুণ্য এবং যৌবনের গান বললেই হেলাল হাফিজের কথা মনে পড়ে। এটা ওনার অর্জন।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘একথা অস্বীকার করার উপায় নেই বাংলাদেশের সংস্কৃতি জগত ওনার শূন্যতা অনুভব করবে। ওনার অবস্থান এক বইতেই চিরস্থায়ী করে রেখেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘হেলাল হাফিজ তার কবিতাতেই বেঁচে থাকবেন। উনি একাকী জীবন কাটিয়েছেন। এটা শিল্পীর বেছে নেওয়া একটি জীবন। আমর মনে হয় না ওনার জীবন নিয়ে আক্ষেপ বা অভিযোগ ছিল। আমি এ বিষয়ে জানি না।’

মন্ত্রণালয় থেকে কবির স্মরণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিল্পী শক্তিশালী হলে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে হয় না। ওনার কবিতাই ওনাকে বাঁচিয়ে রাখবে। তবে মন্ত্রণালয় আমাদের কী কী করা যায়, আমরা কাজ করব। আপনারা খুব দ্রুত শুনবেন।’

বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চ প্রাঙ্গণে কবি হেলাল হাফিজের ১ম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

উপদেষ্টা বলেন, ‘যদিও কবি কখনো পদক-পুরস্কারের জন্য লিখেন না। তবে দুর্ভাগ্য আমরা হেলাল হাফিজকে আমরা কোনো স্বাধীনতা পুরস্কার বা একুশে পদক দিতে পারিনি। উনি এটা পাওয়ার জন্য লিখেননি। কিন্তু জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব। । ফলে এ বিষয়ে কী করা যায়, আমরা দেখব।’

জানাজার নামাজের আগে কবি হেলাল হাফিজের বড় ভাই দুলাল হাফিজ বলেন, ‘আপনারা সবাই আমার ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন। হেলালের কোনো আচরণে কেউ কোনো দুঃখ পেয়ে থাকলে আপনারা তাকে ক্ষমা করে দেবেন।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ বলেন, ‘হেলাল ভাইয়ের মৃত্যু আমার অঙ্গ হানির সমান। আমার কবি হিসেবে সুনাম অর্জনের পেছনে ওনার বড় ভূমিকা ছিল। তিনি অসাধারণ একজন মানুষ ছিলেন। কোমলমতি একজন মানুষ ছিলেন। তিনি প্রেম ও দ্রোহের কবি ছিলেন।’

জানাজা নামাজ শেষে কবি হেলাল হাফিজকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এসময় উপদেষ্টা ফারুকী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ আরও অনেকের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চ প্রাঙ্গণে কবি হেলাল হাফিজের ১ম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, বাংলা একাডেমির পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমসহ একাধিক সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জানাজায় অংশ নেন।

ইত্তেফাক/এসএ
 
unib