জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রলীগের কর্মী আফিয়া আনজুম সুপ্তি বোরকা সনদ তুলতে ক্যাম্পাসে এলেও তাকে আটক করে প্রক্টর অফিসে সোপর্দ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আটক হওয়া ছাত্রলীগ কর্মী আফিয়া বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের (১৪তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে তাকে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। তবে তার নামে কোনো মামলা না থাকায় অঙ্গীকারনামা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা যায়, অভিযুক্ত আফিয়া আনজুম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তার স্নাতক পরীক্ষার সনদ তুলতে এসেছিলেন। তারপর সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে লক্ষ্য করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়। এসময় প্রক্টর অফিসে না যেতে শিক্ষার্থীদের সাথে ধ্বস্তাধস্তিও করেন তিনি। প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হলে পুলিশকে অবগত করে প্রশাসন।
শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, আফিয়াকে চিনতে পেরে শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে পুলিশকে কল দিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন এবং ব্যবস্থা নিতে বলেন। পরে তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন তারা। শিক্ষার্থীরা বলেন, আফিয়া জুলাই গণহত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ছাত্রী হলে ছাত্রলীগ নেত্রী পরিচয়ে দেখাতেন দাপট। শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হেনস্তা করতেন বলেও জানিয়েছে হলের শিক্ষার্থীরা।
আটক হয়ে ছাত্রলীগ কর্মী আফিয়া বলেন, আমি জগন্নাথের কাউকেই কোনো প্রকার আঘাত করিনি, কোনো বিরোধীতা করিনি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা কারণ আমি জুলাই আন্দোলনে এমন কোনো বিরোধিতা করিনি, আমি তখন বাড়িতে ছিলাম। আমি ছাত্রলীগ করতাম। শেখ মুজিবের আদর্শকে ধারণ করি। কিন্তু আমাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। আমি জগন্নাথের রাজনীতিতে সক্রিয় না, ৭১ এর আদর্শকে লালন করি। আমি বঙ্গবন্ধুর পক্ষের লোক।
তিনি আরও বলেন, আমার ছাত্রলীগের কমিটিতে কোনো পদও ছিল না। আমার কারও সাথে কোনো ঝামেলা ছিল না। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, জুলাই আন্দোলনে বিরোধিতার কারণে গত ৭ সেপ্টেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলের আফিয়া সহ নয়জন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ছাত্রীহলের সামনে নাম, ব্যাচ ও ছবিসহ ব্যানার ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।