বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বন্ধ থাকা ১৬ কোম্পানির মধ্যে রপ্তানি বাণিজ্যর সঙ্গে সম্পৃক্ত ১১টি কারখানা ‘মানবিক কারণে‘ সচল করতে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর পল্টনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বেক্সিমকো গ্রুপের একদল কর্মী। তাদের ভাষ্য, মালিকপক্ষকে জানিয়েই তারা সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন।
বেক্সিমকো গ্রুপের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সৈয়দ মো. এনাম উল্লাহ বলেন, আমরা শ্রমিক-অফিসাররা পেটের দায়ে আপনাদের কছে এসেছি। সরকারের কাছে অনুনয়, বিনয় করে বলতে চাই, সরকার বেক্সিমকোতে হস্তক্ষেপ করুক। কারখানা খুলে দিয়ে আমাদের চাকরি বাঁচান।
তিনি বলেন, সরকার যেভাবে চাইবে, প্রতিষ্ঠান সেভাবে চালাক। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দিক। কারখানা চালু থাকলে ধীরে ধীরে সবার পাওনা দিতে পারবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনটি দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হল– অবিলম্বে লে-অফ প্রত্যাহার করে বেক্সিমকোর পোশাক খাতের সব কারখানা খুলে দেওয়া, রপ্তানি বাণিজ্যর জন্য পোশাকের ক্রয়াদেশ পেতে ব্যাংকের ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি খোলার অনুমতি এবং ব্যবসা চলমান রেখে সকল বকেয়া বেতন, কোম্পানির দেনা পরিশোধের ব্যবস্থা নেওয়া।
গত ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থ্যানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলোতে অস্থিরতা চলছে। শ্রমিক অসন্তোষের মধ্যে বন্ধ রাখা হয়েছে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের অধিকাংশ কারখানা। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এ গ্রুপের তিন কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও শাইনপুকুর সিরামিকসই কেবল সরকারের হস্তক্ষেপে সচল রয়েছে।
বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও উপদেষ্টা। তিনি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর থেকে গ্রুপটির বেশিরভাগ উদ্যোক্তা আত্মগোপনে রয়েছেন।
অনেকগুলো অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ থাকায় এলসি খুলতে পারছে না কোম্পানি। ব্যাংক থেকে টাকা পাওয়া বন্ধ হওয়ায় নগদ অর্থের সংকটে পড়েছে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলো।
বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে মোট ১৬টি কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ১১টি বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতের। এই ১১টি কারখানা সচল করার দাবি সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন কর্মীরা।
সৈয়দ মো. এনাম উল্লাহ বলেন, লে-অফ সুবিধা ১৬ কোম্পানির ২৭ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী পাচ্ছেন। তারা অর্ধেক বেতন পাচ্ছেন এখন। এসব কোম্পানিতে এক বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করা শ্রমিক-কর্মচারীদের সংখ্যা ২৭ হাজার। এক বছরের নিচে থাকা কর্মচারী-কর্মকর্তা মিলিয়ে তা ৪২ হাজারর মত।
সরকার রিসিভার (প্রশাসক) নিয়োগ দেওয়ার পর থেকে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের কর্মচারী-শ্রমিকদের বেতন বকেয়া নেই বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।