গাড়িতে ধাক্কা লাগার জেরে এক সিএনজি অটোরিকশা চালককে তালাবদ্ধ রুমে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে ঈদগাঁও উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিমল চাকমার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে এ অভিযোগ দেওয়া হয়। অভিযোগকারী মোস্তাক মিয়া (৩৫) রামু উপজেলার রশিদনগর ধলিরছড়া মুরাপাড়ার সাহাব মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২৮ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঈদগাঁও বাস স্টেশনে যাত্রী নামিয়ে দিতে গিয়ে সিএনজিটি রাস্তার পাশে দাঁড়ালে যানজট সৃষ্টি হয়। এতে ইউএনওর গাড়িও আটকে পড়ে। সরতে দেরি হওয়ায় ইউএনও গাড়ি থেকে নেমে থাপ্পড় দিয়ে সিএনজির চাবি নিয়ে নেন এবং ওই চালককে পুলিশের গাড়িতে তুলে ইউএনও অফিসে নিয়ে যায়। পরে তালাবদ্ধ একটি রুমে দিনভর উপোস আটকে রেখে রাত ১০টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। দুই দিন ধরে আটকে রাখা হয় সিএনজি অটোরিকশাটি। অথচ ওই অটোরিকশা চালিয়ে পরিবারের ভরণ-পোষণ চালান মোস্তাক মিয়া।
পানিরছড়া সিএনজি চালক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, এটা শ্রমিক নির্যাতন। যথাযথ বিচার না পেলে আমরা আন্দোলনে যাবো।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ঈদগাঁও বাস স্টেশন। স্টেশনে সড়কের দু'পাশে সিএনজি ও টমটমগুলো এলোপাতাড়ি রাখার কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার দুপুরের আগেও এলোমোলোভাবে গাড়ি দাঁড়ানো ছিল। ওই সময় একটি সিএনজি রাস্তায় হঠাৎ দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠা-নামার ফলে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। যানজটে ইউএনওর গাড়িও আটকে যায়। এর মাঝেই নাম্বারবিহীন ওই সিএনজিটি উল্টো ঘুরার সময় ইউএনওর গাড়িতে ধাক্কা লাগে। দুঃখ প্রকাশের বদলে ইউএনওর গাড়ি চালকের সঙ্গে তর্কে জড়ায় সিএনজি চালকটি। এক পর্যায়ে সিএনজি অটোরিকশাসহ ওই চালককে নিয়ে যায় পুলিশ।
ঈদগাঁওর ইউএনও বিমল চাকমা বলেন, পুলিশ নাম্বারহীন অটোরিকশাটি জব্দ করতে চেয়েছিল। মানবিক দিক চিন্তা করে তাকে আমার অফিসে নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চলানোর নির্দেশনা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হয়ে রাস্তায় বা অফিসে কাউকে প্রহার বা অশালীন আচরণ করবো এটা কি করে হয়? হয়তো কোনো স্বার্থন্বেষী পক্ষ উনাকে (অটোরিকশা চালক) হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, অভিযোগটি এখনও টেবিলে আসেনি। হাতে পেলে খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।