বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

ছয় দশকের আলোচিত ব্যান্ডের গ্র্যামি জয়

আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫:৩৭

চার কিংবদন্তির ব্যান্ড ‘দ্য বিটলস’ ভেঙেছে ৫৫ বছর আগে। জন লেনন, জর্জ হ্যারিসন, পল ম্যাককার্টনি ও রিঙ্গো স্টার- এই চার বিটল বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করেছেন। এখনো তাদের অনুরাগীদের মধ্যে বিটলম্যানিয়া রয়ে গেছে। 

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ৬৭তম গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডসে ব্যান্ডটির সর্বশেষ প্রকাশিত গান ‘নাউ অ্যান্ড দেন’ সেরা রক পারফরম্যান্স পুরস্কার পেয়েছে। সত্তর দশকে তৈরি করা জন লেননের একটি ডেমো থেকে এই গান সম্পূর্ণ করেন পল ম্যাককার্টনি ও রিঙ্গো স্টার। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের লস যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাঞ্জেলেসের ক্রিপ্টো ডটকম অ্যারেনায় বিটলস ব্যান্ডের পক্ষে গ্র্যামি পুরস্কার গ্রহণ করেন জন লেননের ছেলে সংগীতশিল্পী শন ওনো লেনন। 

গ্র্যামির আয়োজক রেকর্ডিং অ্যাকাডেমির নিয়ম অনুযায়ী, গান-বাজনায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের মাধ্যমে ব্যবহৃত হলেই কেবল সেটি পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে। ‘নাউ অ্যান্ড দেন’ গানের ক্ষেত্রে সেটি মেনেছেন বিটলসের জীবিত দুই সদস্য পল ও রিঙ্গো। 

ষাট দশকের মধ্যভাগে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করে এই গানের দল। রক অ্যান্ড রোল ধারার এই ব্যান্ড লোক সংগীত, রকাবেলী সাইকেডেলিক এবং ভারতীয় সংগীতকে ধারণ করে সংগীতভূবনে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ফ্যাশন, অভিনয়, চলচ্চিত্র, ফিলোসফিক্যাল লিরিকের জন্য ব্যান্ডের সবাই ছিলেন আইকনিক। আজ পর্যন্ত বিশ্বের যেকোনো ব্যান্ডের চেয়ে বেশি অ্যালবাম বিক্রি হয়েছে বিটলসের। ব্যান্ডটি প্রায় ৪০টি অ্যালবাম প্রকাশ করেছে। সবগুলোই ছিল বাণিজ্যিকভাবে সফল। ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বিটলসের অ্যালবাম এক বিলিয়নের ওপর বিক্রি হয়েছে। 

বিশ্বজুড়ে গানের সফর করে বেড়িয়েছেন এই ব্যান্ড। ১৯৬৮ সালের একদল বন্ধু নিয়ে লন্ডন থেকে ভারতের হৃষিকেশে এক আশ্রমে সফরে আসেন বিটলস। ভারতের সেই আশ্রম আজ প্রায় ৬০ বছর পর হয়ে উঠেছে বিটলস-ভক্তদের তীর্থস্থান। প্রায় দুই মাসের এই ভারত সফর নিয়ে তৈরি হয়েছে ডকুমেন্টারি, ডকুফিকশন সিনেমা। এ সফরে দলটি প্রায় ৩০টি নতুন গান বেঁধেছিল। যার বেশির ভাগই জায়গা করে নেয় বিটলসের ‘হোয়াইট’ অ্যালবামে। 

বিটলসের সঙ্গে বাংলাদেশের গানপ্রেমী মানুষ এবং ব্যান্ডগুলো নানাভাবে কানেক্টেড। ষাটের দশকে বাংলাদেশে ব্যান্ড সংগীত খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। নতুন নতুন ব্যান্ড গঠন হতে থাকে। তখন অনেকেই বিটলস দ্বারা অনুপ্রাণিত হন। বিটলস ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট জর্জ হ্যারিসন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্য আয়োজন করেছিলেন ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’। ১৯৭১-এর শুরুর দিকে তিনি ভারতের কিংবদন্তি সংগীতজ্ঞ রবি শংকরের সঙ্গে আলাপকালে, রবি শংকর তার কাছে বাংলাদেশের অবস্থা তুলে ধরেন। হ্যারিসন সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের জন্য কনসার্ট করবেন। ১ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বের ইতিহাসের সেরা কনসার্টগুলোর মধ্যে একটি কনসার্ট। 

বিটলসের উল্লেখযোগ্য কিছু অ্যালবামের মধ্যে রয়েছে- ‘প্লিজ প্লিজ মি’, ‘উইদ দ্য বিটলস’, ‘আ হার্ড ডে’স নাইট’, ‘বিটলস ফর সেল’, ‘হেল্প’, ‘ম্যাজিকাল মিস্টেরি ট্যুর’, ‘লেট ইট বি’ ইত্যাদি। ১৯৮০ সালে জন লেনন তার এক অনুরাগীর গুলিতে নিহত হন। ২০০১ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে জর্জ হ্যারিসন মারা যান। বাকি দুই বিটল পল এবং রিঙ্গো এখনো কাজ করে গ্র্যামি জয় করছেন। বিশ্বের সংগীতের ইতিহাসে ‘বিটলস’ একটি প্রেরণার নাম।

ইত্তেফাক/এসএ
 
unib